আধুনিক স্মার্টফোন মানেই নতুন বৈশিষ্ট্য, নতুন বৈচিত্র্য। বর্তমানে বাজারে থাকা স্মার্টফোনগুলো বিভিন্ন ডিজাইন এবং বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন সমৃদ্ধ। উদ্ভট কিন্তু মনকাড়া ডিজাইনের এমন স্মার্টফোনই হবে আগামীদিনের মোবাইল ফোন। আগামী দশকেই স্মার্টফোনের ডিজাইনে এবং গঠনে ঘটবে অনেক পরিবর্তন। সেন্সরযুক্ত কিংবা স্রেফ কাঁচের তৈরি, ওলেড স্ক্রিন এমনতরো আরো হরেক প্রযুক্তিপসরাই থাকবে সেই মোবাইল হ্যান্ডসেটে। সম্প্রতি কম্পিউটারওর্য়াল্ড ভবিষ্যত স্মার্টফোনের এমনই কিছু চমৎকার নকশা তুলে ধরেছে। এইসব বিচিত্র নকশার স্মার্টফোনের মধ্যে কিছু ফোন ডিজাইনার ফার্মের তৈরী আর কিছু হ্যান্ডসেট নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের নকশায় করা।
কম্পিউটার ওয়ার্ল্ডের তালিকায় থাকা ভবিষ্যতের এই স্মার্টফোনের নানান চেহারা নিয়েই টেকের আজকের এই ফিচার।

কিওচেরা কাইনেটিক
কিওচেরা কোম্পানির বানানো এ স্মার্টফোনটি হবে ওয়ালেট আকৃতির। এটি খুব সহজেই পকেটে রাখা যাবে। এতে থাকবে বড়ো স্ক্রিনের ওলেইড ডিসপ্লে। এটি চলবে কাইনেটিক শক্তিতে। মোবাইলটির শরীরেই থাকবে কিবোর্ড। তবে, এই কিবোর্ড কেবলই ব্যবহারের সময়ই কাজে লাগবে আর অব্যবহৃত অবস্থায় কিবোর্ড প্রায় অদৃশ্যই থাকবে।
এই ফোনটিকে চাইলে ভাঁজ করে পকেটেও রাখা যাবে। ফোনটির ডিজাইন করেছেন সুসান ম্যাককিনি। ইওএস বা ই-অপারেটিং সিস্টেমের এই ফোনটির পর্দা পলিমারের । ভাঁজ করা অবস্থায়ই কল রিসিভ করা যাবে। আর মজার ব্যাপারটি হচ্ছে- এই ফোনে কথা বললেই এতে নাকি শক্তি জমা হতে থাকবে। কাইনেটিং শক্তিকে বৈদ্যুতিক চার্জে রূপান্তর করতে এই ফোনে থাকছে পিজোইলেকট্রিক জেনারেটর। অবশ্য জানা গেছে, এটি এখনো তার প্রাথমিক ডিজাইন পর্যায়েই আছে।

নোকিয়া মোরফ
নোকিয়া রির্সাচ সেন্টার (এনআরসি) এবং যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রীজ ন্যানো-সায়েন্স সেন্টার যৌথভাবে গবেষণা করে এ সেটটি তৈরী করেছে।
নকিয়ার এই সেটটি সচ্ছ এবং নমনীয় উপাদান দিয়ে তৈরী। যে কোনো পরিবেশে এই সেটের ন্যানো সেন্সরটি কাজ করে। প্লেন বিষয়ক যে কোনো হুমকিও নাকি এ সেটটি বুঝতে পারে এবং ব্যবহারকারীকে সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক করে দেয়। ফোনটির আলাদা বিশেষত্বটি হচ্ছে- এটি নিজে থেকেই পরিছন্ন থাকতে সক্ষম!

বেন্ড ইন টাচ
নামের মধেই প্রকাশিত মোবাইল সেটটির বিশেষত্ব! বেন্ড ইন টাচ হ্যান্ডসেটটি টাচ স্ক্রিন সেট। ইউক্রেনের ডিজাইনার অ্যান্ডি করভেটস-এর ডিজাইন করা বেন্ড ইন টাচ সেটটিতে আলাদাভাবে একটি স্ক্রিন লাগানোর পদ্ধতিও আছে। বেন্ড ইন টাচ হ্যান্ডসেটটির দুটি আলাদা স্ক্রিনে আলাদা কাজও করা যাবে। একটি স্ক্রিনে ব্রাউজিং করলে অন্য স্ক্রিনে ছবি দেখা বা অন্য কাজ করা যাবে।

ব্রেসলেট ফোন
ব্রেসলেটের মতোই হাতে পরা যাবে এই মোবাইল হ্যান্ডসেটটি। অনেকগুলো বাটনসহ ডিরেকশনাল প্যাড, ক্যামেরা বাটন এবং আলাদা কীপ্যাডও আছে সেটটিতে। আকিহাবারা সংবাদ মাধ্যম-এর বরাতে জানা গেছে, এই ফোনটিকে কোরা ব্রেসলেটফোন বলা হয়। ব্রেসলেট ফোন তৈরি করেছে ফুজিৎসু।

সনি এরিকসন
এটি সনি এরিকসনের ওলেইড মোবাইল। সনি এরিকসনের রির্পোট অনুসারে, এ মোবাইলে ৩.২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা, ২জিবি মেমোরিসহ এফ এম রেডিও আছে। জানা গেছে, এ রকম ফোনের ডিজাইন ৩ বছর আগেই সনি এরিকসন দেখিয়েছিলো।

উইন্ডো ফোন
উইন্ডো ফোনের আর্কষনীয় বৈশিষ্ট্য হলো ব্যাবহারকারীর অবস্থানের আবহাওয়া সম্পর্কে আন্তরিক ভাবে খবর জানানো। মোবাইলের ইউজার ইন্টারফেসের মাধ্যমে যাবতীয় আবহাওয়া বিষয়ক তথ্য জানিয়ে দেবে উইন্ডোফোন। এ উইন্ডো ফোনের ডিজাইনার সেওনঘান সং।

ক্যামেরা-প্রজেক্টর-প্রিন্টার
ক্যামেরা-প্রজেক্টর-প্রিন্টারসহ এই ফোনটি মাল্টি-টাস্কিং ফোন। শুধু অ্যাপ্লিকেশন নির্ভর না থেকে এই মোবাইলটিকে ক্যামেরা, প্রজেক্টর এমনকি প্রিন্টার হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। এ মোবাইলে গেম কন্ট্রোলারও আছে।

সেপারেট কাইটেট
জাপানের এনটিটি ডোকোমো এই টাচস্ক্রিন সেপারেট কাইটেট সেটটির উদ্ভাবক। এ ফোনের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এটিতে ব্লুটুথ দিয়ে আলাদা স্ক্রিন এবং কী-প্যাডও সংযুক্ত করা যায়। প্রয়োজনবোধে এই সেটের দুই পাশে থাকা চুম্বকের সহায়তায় কী-প্যাড এবং স্ক্রিন লাগিয়ে নেয়া যায়।
জানা গেছে, এই সেপারেট কাইটেট ব্যবহারের সময় স্রেফ কথা বললেই নাকি সেগুলো একবারে ইমেইল আকারে লেখা হয়ে যাবে।

ডাবড পেবল ফোন
ডাবড পেবল ফোন এর ধারণাটি ২০০৯ সালের সিয়াটেক টেকনোলজি ট্রেড শোতে প্রথম জানানো হয়েছিলো। ফোনটির উদ্ভাবক ফুজিৎসু। ফোনটি কাঁচঘেরা কাঠামোর মধ্যে ব্লাক বল্ব এর সমন্বয়। ব্লাক বল্ব হলো, একফোঁটা তরল পদার্থ বা নরম কোনো ক্ষুদ্র বস্তু। জানা গেছে, এই বল্বটি যখন ফোনের বিভিন্ন স্থানে টেনে আনা হবে, তখন সেটি সেখানে বিভিন্ন স্ক্রিন তৈরি করতে সক্ষম হবে। সেই সঙ্গে তৈরি করবে, কি প্যাড, মিডিয়া প্লেয়ার এবং ওয়েব ব্রাউজারের মতো অপশনও।
জানা গেছে, যোগাযোগের জন্য এ সেটটিতে সকল ধরনের মাল্টিমিডিয়া প্রোগ্রাম আছ্রে । এ সেটটির বিশেষ বৈশিষ্ট হচ্ছে- এটি একেবারেই ভিন্ন আকৃতির এবং স্টাইলিশ একটি ফোন।

ng2 কনসেপ্ট ফোন
জানা গেছে, অক্সিজেন বা ng2 কনসেপ্ট এর এই ফোনটির ডিজাইন করা হয়েছে ‘মলিকুল অ্যাসথেটিকস’ বা অণুর সৌর্ন্দয্যে উৎসাহিত হয়ে! অক্সিজেন অণুর গঠন অনুসারে এই ফোনের ডিজাইন করা হয়েছে বলেই জানা গেছে। ফোনটি তৈরি করেছে টিজেপ ডিজাইন। এই সেটের অদ্ভুত আকৃতির কী-প্যাড এবং একটি স্ক্রিন আছে।

টাচ উড
এই সেটটি একটুকরো কাঠের তৈরী। অর্থাৎ এ সেটের কাভারটি কাঠের তৈরী। এনটিটি ডোকোমো, সার্প এবং ওলিমপাস এর যৌথ উদ্যোগে এই টাচ উড ফোনটি তৈরি। জানা গেছে বন কেটে উজাড় করে নয়, বরং বনের উদ্বৃত্ত কাঠ থেকেই এই ফোনটি তৈরি করা হয়েছে। মোবাইল সেটটির নির্মাতাদের দাবি হচ্ছে- এই মোবাইলটি যদিও কাঠের তৈরী কিন্তু এতে ঘুণ ধরবে না আর এটি ওয়াটারপ্রুফও বটে।
জানা গেছে, কাঠের তৈরি এই ফোনটিতে কাঠের প্রাকৃতিক সব বৈশিষ্ট্যই নাকি থাকবে!

স্নেক ফোন
হারানোর ঝুঁকি এড়াতে স্নেক ফোন নাকি বেশ কাজে আসবে। জানা গেছে, এই ফোনটি কব্জিতে জড়ানো থাকবে সাপের মতোই। ফোনটি তৈরি করেছে প্রোডাক্ট ভিশনারিজ। এফোনটিকে প্রয়োজনবোধে যেকোনো আকারও দেয়া যাবে।

মাস্টার চিফ’স ফোন অফ দ্যা ফিউচার
এই ফোনটি ‘রাডিয়া’ নামে পরিচিত। রাডিয়াতে স্রেফ গোলাকার ছোট্ট একটি ডিসপ্লেই শুধু আছে। জানা গেছে, পোশাকের সঙ্গে সহজেই মানিয়ে যাওয়া এই ফোনটি ডায়ালিং ফোন হিসেবেই বেশি ব্যবহারবান্ধব হবে ।