ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার খাল-বিল এবং জলা-জমি এখন বর্ষার পানিতে টইটম্বুর হয়ে আছে। আর নতুন পানি পেয়ে মাছেরাও চঞ্চল ঘোরাফেরা করছে। সুযোগ বুঝে মৎস্য শিকারিরা বড়শি হাতে ছুটে যাচ্ছে ওই সব মুক্ত জলাশয়ের বাইরেও টিকিটের বিনিময়ে কোনো কোনো পুকুরে। তারা পানিতে ছিপ ফেলবার আগে সাধারণত বড়শিতে গেঁথে দিচ্ছে মাছের অত্যন্ত পছন্দের খাবার পিঁপড়ার ডিম।
মুক্তাগাছা শহরের জামাইয়ের মোড়ে বর্ষা মৌসুমের মাছ শিকারিদের চাহিদা বুঝে প্রতিদিন বসছে পিঁপড়ার ডিমের হাট। সকাল থেকে নিয়ে বিকেল পর্যন্ত এখানে পিঁপড়ার ডিম বিক্রি করা হয়। এগুলো মূলত মধুপুর বনাঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা হয়। পরে তারা সেগুলো প্রতি কেজি ২৫০ টাকা পাইকারি ধরে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে। পরে সেগুলো ওই ব্যবসায়ীরা পিঁপড়ার ডিম মাছ শিকারিদের কাছে প্রতি কেজি ৩২০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকে। এ অঞ্চলের মানুষদের ভাষায় পিঁপড়ার ডিমকে মাঞ্জাইল বলা হয়। এক ধরনের বড় লাল পিঁপড়া বনাঞ্চলের মেহগনি, গজারি, শাল সহ বিভিন্ন গাছের কিছু পাতা দিয়ে গোলাকার বাসা বানিয়ে ভেতরে অসংখ্য ডিম ছাড়ে। আর পেশাজীবী পিঁপড়ার ডিম ব্যবসায়ীরা বাঁশের মাথায় ঢালি বেঁধে সেই ডিম পেড়ে আনে।
পিঁপড়ার ডিম ব্যবসায়ী উপজেলার গোয়ারী গ্রামের জিন্নত আলী বলেন, যখন মাছ শিকারের ধুম পড়ে যায় তখন প্রতি কেজি পিঁপড়ার ডিম হাজার টাকায়ও বিক্রি হয়। এ ডিম মুক্তাগাছা এলাকার মাছ শিকারি ছাড়াও ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার মাছ শিকারিরা তা কিনতে মুক্তাগাছায় আসে। গোয়ারী গ্রামের ইব্রাহিম খলিল (৮৫) বলেন, তিনি প্রতিদিন গড়ে ৩ কেজি পিঁপড়ার ডিম বিক্রি করে থাকেন। তবে বর্ষাকাল চলে গেলে ডিমের চাহিদা কমে আসে। এ পেশার সঙ্গে প্রায় ৫০ জন ব্যবসায়ী জড়িত আছে।