অনেক মাছই শব্দ করতে পারে। এর মধ্যে রাক্ষুসে মাছ পিরানহার কিছু প্রজাতি রয়েছে। সম্প্রতি পশ্চিমা একদল গবেষক দাবি করছেন, পিরানহার এই শব্দ একধরনের সংকেত। এই শব্দসংকেতের মাধ্যমে তারা পরস্পর ভাববিনিময় করে।গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন বেলজিয়ামের লিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এরিক পারমেন্টিয়ার। তাঁদের গবেষণাপ্রতিবেদন জার্নাল অব দ্য এক্সপেরিমেন্টাল বায়োলজিতে প্রকাশিত হয়েছে।

পিরানহার স্বভাব সম্পর্কে যারা জানে, মাছটির নাম শুনলেই তারা আঁতকে ওঠে। ধারালো দাঁতের এই মাছগুলো যখন কোনো প্রাণীর ওপর ঝাঁক বেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়ে, তার দফারফা হতে সময় লাগে না। তবে মাছগুলো যে পারস্পরিক সামাজিকতা রক্ষা করে, এত দিন তা অজানা ছিলবিজ্ঞানীদের দাবি, পিরানহা শব্দ তৈরির মাধ্যমে পারস্পরিক যোগাযোগ রক্ষা করে। একটি পিরানহা আরেকটির কাছে গিয়ে যে শব্দ করে, তা পানির নিচে ধারণযোগ্য মাইক্রোফোনের মাধ্যমে রেকর্ড করে এ নিয়ে গবেষণা চালান বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানতেন যে লাল পেটওয়ালা পিরানহা শব্দ করে থাকে। কেন করে, এটাই ছিল জানার বিষয়।

এরিক পারমেন্টিয়ার ও তাঁর সহযোগীরা একটি চৌবাচ্চায় রাখা পিরানহার শব্দ ধারণ করতে হাইড্রোফোন নামের বিশেষ ধরনের মাইক্রোফোন স্থাপন করেন। এতে আলাদা তিন ধরনের শব্দ ধরা পড়ে। পরে পর্যবেক্ষণে এসব শব্দের মাহাত্ম্য উদ্ভাবন করেন তাঁরা।

দেখা গেছে, একটি পিরানহা আরেকটির সামনে নিজেকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে এক ধরনের শব্দ করে। এ সময় একটি আরেকটির মুখোমুখি হয়। তবে সংঘাতে জড়ায় না। আবার একটি মাছ আরেকটিকে ধাওয়া করার সময় বা লড়াই করার সময় আলাদা শব্দ করে থাকে। সাধারণ খাবার নিয়েই ওদের বিরোধ চলে।

গবেষকদের ভাষ্য, শব্দ করার ক্ষমতা আছে—এমন অন্যান্য মাছের মতোই পিরানহা ‘সুইম ব্লাডার’ দিয়ে শব্দ তৈরি করে। এ ব্যাপারে আরও গবেষণা চালাতে পিরানহার মূল আবাস আমাজন নদীতে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

তথ্যঃ বিবিসি।