জনগণের সমস্যা সমাধানের দাবিতে’ আগামী ৩০ নভেম্বর দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি।

সোমবার দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই কর্মসূচির সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক চলাকালীন রাত ৯টার দিকে এক সংবাদ ব্রিফিং এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন।

অন্য কর্মসূচির মধ্যে আছে� ২৫ থেকে ২৭ নভেম্বর জেলা-উপজেলায় এবং ২৮ নভেম্বর ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে সমাবেশ-মিছিল। এছাড়া ২৯ নভেম্বর হরতালের সমর্থনে সারাদেশে মিছিলের কর্মসূচি রয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সেনানিবাসের মইনুল সড়কের বাড়ি ছাড়া বিষয়ে আপিল আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা ২৯ নভেম্বর।

চলতি সরকারের আমলে এটি বিএনপির ডাকা তৃতীয় হরতাল। গত ২৭ জুন প্রথম হরতাল ডাকে বিএনপি। এরপর খালেদা জিয়ার বাড়ি ছাড়ার প্রতিবাদে গত ১৪ নভেম্বর সারাদেশে হরতাল ডাকে দলটি।

হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী গত ১৩ নভেম্বর খালেদা জিয়া সেনানিবাসের বাড়ি ছাড়েন। আন্তঃবাহিনী জন সংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) দাবি করেছে, খালেদা স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়েছেন। তবে খালেদা এবং বিএনপি দাবি করেছে, তাকে জোরর করে বাড়ি ছাড়ানো হয়েছে।

৩০ নভেম্বরের হরতালসহ অন্য কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানিয়ে খোন্দকার দেলোয়ার বলেন, “আমরা জনগণের সমস্যা সমাধানে দাবিতে এই কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

দ্রব্যমূল্য, আইনশৃঙ্খলা, বিরোধী নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা-হয়রানি, সর্বক্ষেত্রে দলীয়করণসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দাবিতে বিএনপি গত ২৭ জুন হরতাল ডাকে� এ কথা উল্লেখ করে দেলোয়ার বলেন, “কিন্তু ৫ মাসের মধ্যেও ওই দাবির কোনোটিই সরকার কোনো সমাধান দিতে পারেনি।”

বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, “সরকার দেশকে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিরোধীদল ছাড়া তারা একদলীয় শাসন কায়েমের মাধ্যমে দেশে দুঃশাসন চালাচ্ছে।”

তিনি জানান, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দেশের সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা করে এই কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়েছে।

খালেদা জিয়াকে তার ঢাকা সেনানিবাসের বাড়ি থেকে ‘জোর করে বের করে দেওয়ার সরকারি উদ্যোগের’ কঠোর সমালোচনা করে দেলোয়াার বলেন, “তাকে কেবল উচ্ছেদই নয়। আইএসপিআর’র মাধ্যমে বিরোধীদলীয় নেতা সর্ম্পকে অপপ্রচার চালাচ্ছে সরকার।”

বিএনপি মহাসচিব তার ভাষায় বিদেশিদের কাছে দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দেওয়া, প্রশাসনে পদোন্নতিতে দলীয়করণ, সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করার নীল নকশা, বিদেশ থেকে শ্রম শক্তি ফিরে আসা, সরকারি দলের দুর্নীতি, বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাস সমস্যার সমাধানে সরকারের চরম ব্যর্থতার চিত্র তুলে ধরেন সংবাদ ব্রিফিঙে।

সোমবার রাত ৮টার দিকে গুলশানের কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠক শুরু হয়।

বৈঠকে দলের মহাসচিব ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আরএ গনি, মওদুদ আহমেদ, এম শামসুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান, এমকে আনোয়ার, জমির উদ্দিন সরকার, আসম হান্নান শাহ, সারোয়ারি রহমান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, রফিকুল ইসলাম মিঞা, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রোববার স্থায়ী কমিটির সঙ্গে খালেদা জিয়া বৈঠকে বসেন। ওইদিন বৈঠকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দলটির সহসভাপতি নাজমুল হুদাকে দল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়।

রোববার মূলতবি হওয়া সেই বৈঠক সোমবার রাতে আবার শুরু হয়। বৈঠক শেষ হয় রাত ১০টা ২৫ মিনিটে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম