সামান্য জ্বর, মাথাব্যথা; কিন্তু সপ্তাহ না পেরোতেই মারা যাচ্ছেন আক্রান্ত মানুষটি। এ ঘটনা কেন ঘটছে—তার কোনো ধারণাই নেই কারও। এভাবেই গত ছয় মাসে ‘মগজ-খেকো’ অ্যামিবার শিকার হয়ে পাকিস্তানের করাচিতে ১০ জনের মৃত্যু ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। খবর রয়টার্সের।

অ্যামিবা একটি এককোষী মুক্তজীবী প্রাণী। অতি ক্ষুদ্র এককোষী প্রাণীটি এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানে ‘মগজখাদক’ হিসেবে কুখ্যাতি পেয়ে গেছে।‘নাইজেলরিয়া ফ্লাওয়ারি’ নামের এ অ্যামিবা দূষিত পানির মাধ্যমে ছড়ায়। পানির মাধ্যমে নাক দিয়ে এ অ্যামিবা মস্তিষ্কে ঢুকে যায় এবং স্নায়ু ধ্বংস করে ফেলে। নদী, পুকুর, হ্রদ ও ঝরনার পানি যেখানে উষ্ণ, সেখানে এ ধরনের অ্যামিবা বাস করে।

এ ছাড়া শিল্পকারখানার উষ্ণ পানি পড়ে এমন মাটি ও সুইমিংপুলেও এ ধরনের অ্যামিবার দেখা মেলে।করাচিতে ১০ জন এ ধরনের অ্যামিবার শিকার হয়ে মারা গেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তা মুসা খান।এ অ্যামিবা মস্তিষ্কে ঢুকে পড়লে মারাত্মক কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। প্রাথমিক অবস্থায় লক্ষণ থাকে হালকা মাথাব্যথা, ঘাড়ব্যথা, জ্বর ও পেটব্যথা।এ প্রসঙ্গে মুসা খান বলেন, পাকিস্তানের অধিকাংশ চিকিত্সাকেন্দ্রকে এ বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এ সংক্রান্ত সচেতনতা বাড়ানোরও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বিশুদ্ধ পানি পান করার পরামর্শ দিয়ে মুসা খান বলেন, পানি যেন মানুষের নাকের বেশি গভীরে প্রবেশ করতে না পারে, এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। দূষিত পানিতে সাঁতার কাটা বা গোসল করার সময় এ ধরনের অ্যামিবা মস্তিষ্কে প্রবেশ করতে পারে।২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানে এ ধরনের অ্যামিবার মাধ্যমে সৃষ্ট জটিলতার খোঁজ মিলেছিল। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফল ডিজিজ কন্ট্রোল নামের প্রতিষ্ঠানটি ওই দেশে ২০০২ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩২ জনের ক্ষেত্রে এ ধরনের অ্যামিবার কারণে মৃত্যুর ঘটনা রেকর্ড করেছে।

 

-prothom alo