“দাওয়া তোলা” কিশোরগঞ্জের একটি আঞ্চলিক শব্দ, ‍এর মানে হচ্ছে নতুন ধান কেটে বাড়ি নিয়ে যাওয়া। কিশোরগঞ্জে এখন এমন জায়গা কম আছে যেখানে বিদ্যুতের আলো পৌঁছায় নেই।কিন্তু ৩ বছর আগে কল্পনার মত ছিল।কিন্তু এটা এখন বাস্তব। আমরা কিশোরগঞ্জ শহরে থাকি সবকিছু হাতের নাগালে কিন্তু যারা গ্রামে থাকে তারা এতসব পায় না। আমরা আজ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সহজেই যোগাযোগ রাখছি সারা পৃথিবীর সাথে কিন্তু তাদের এই কথা বললে তারা একটাই বলবে “আনতাজি” মানে অসম্ভব।

হোসেনপুর থেকে আমার একজন বন্ধু প্রতিদিন আজিম উদ্দিন স্কুলে এসে পড়াশোনা করতো তা প্রায় ৩ বছর আগে আমি তখন নতুন কম্পিউটার কিনলাম।তার সাথে আমার প্রতিদিন কথা হয়, কম্পিউটার সর্ম্পকে অনেক কিছু তাকে বললাম সেই এই কম্পিউটারে এর উপর আগ্রহী হয়ে উঠল। একসময় সে ৪৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি কম্পিউটার কিনবে বলে স্থির করল, কিন্তু তার বাবা বলল “দাওয়া তোলা” শেষ না হলে কিছুতেই টাকা দিতে পারবে না। শুরু হল তার দিন গোনা কিন্তু দু:খের বিষয় সেই বছর অতিবৃষ্টিতে ধান কাটার আগেই পানির নিচে চলে যায়।

তাদের সংসার চলার মতই টাকা থাকলনা, আবার কম্পিউটারের আশা। পরের বছর সে আবার বায়না ধরে কিন্ত এই বছর ঘটল আরেক ঘটনা। লঞ্চ দিয়ে ধান আনার সময় ডাকাতের তান্ডবে সব হারাতে হয়। আমার বন্ধুর কম্পিউটারে আশা শেষ। সে মনে করল এই কম্পিউটারের জন্যই সব হচ্ছে কারন আগে ত এমন হতো না। পরের বছর আমি ঐ স্কুল থেকে অন্য স্কুলে ভর্তি হই তার কথা জানি না।কিন্তু এই (ফেইসবুক প্রজন্মর) যুগে ৩বছর পরেও তাকে পেয়ে গেলাম। এখন হোসেনপুরেও কম্পিউটার এসেছে।আ ধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া তারাও পাচ্ছে। কিন্তু পল্লি বিদ্যুতের অবস্থার পরির্বতন হল না। ৩বছর আগে যে রকম ছিল এখনো তেমনি।