কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই মাস বন্দী থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেলেন কামাল মিয়া (৩২)। বাজিতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) হস্তক্ষেপে গতকাল সোমবার তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।চিকিৎসা বিল দিতে না পারায় গত দুই মাস কামালকে ওই হাসপাতালে বন্দী রাখা হয়েছিল। গতকাল প্রথম আলোসহ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসককে এ ব্যাপারে প্রতিবেদন দেওয়ার অনুরোধ জানায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। জেলা প্রশাসক মো. সিদ্দিকুর রহমান ওই হাসপাতালের পরিচালকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদনে বিষয়টির সত্যতা উল্লেখ করে এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের কাছে দিকনির্দেশনা চেয়ে অনুরোধ জানায়।

পরে জেলা প্রশাসক বিকেলে তাঁর কার্যালয়ে সিভিল সার্জন দীন মোহাম্মদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. দেলোয়ার হোসেনসহ স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে জেলা প্রশাসক ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিল মওকুফ করে কামালকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন। এ ছাড়া তিনি বাজিতপুরের ইউএনওকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে সন্ধ্যার দিকে ইউএনও মো. মোখলেসুর রহমান স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে কামালকে মুক্ত করে আনেন।

সিভিল সার্জন দীন মোহাম্মদ বলেন, ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে পরবর্তী সময়ে এ ধরনের অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খাদ্যে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৬ এপ্রিল ওই হাসপাতালে ভর্তি হন কামাল মিয়া। ভর্তির সময় ১৫ হাজার টাকা অগ্রিম জমা নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তিন দিন চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে ওঠেন কামাল। ২৮ এপ্রিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে ছাড়পত্র (রিলিজ) দিয়ে অগ্রিম নেওয়া টাকাসহ মোট ৪৬ হাজার ৯০২ টাকার বিলের একটি রসিদ ধরিয়ে দেয়। এ টাকা পরিশোধ করতে না পারায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে গতকাল পর্যন্ত আটক রাখে। কামালের বাড়ি কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার শ্রীমন্তপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত আবদুল মোতালিবের ছেলে।