একটু বৃষ্টি হলেই কিশোরগঞ্জ আন্তজেলা বাস টার্মিনালের চত্বর কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। চালু হওয়ার ২০ বছর পরও টার্মিনাল এলাকায় কোনো সংস্কারকাজ না করায় এর চত্বরে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। একই কারণে চত্বরে বিছানো ইটগুলোও উঠে গেছে। এখানে জমা হওয়া ময়লা-আবর্জনাও নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। শৌচাগারগুলোও নোংরা। এসব কারণে এখানে এসে বাসযাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহান।
পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, শহরের গাইটাল এলাকায় অবস্থিত আন্তজেলা বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে দূরপাল্লার তিন শতাধিক বাস ছাড়ে।
শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, বাস টার্মিনালে ঢোকার সবগুলো রাস্তার অবস্থা খারাপ। আগের দিন সামান্য বৃষ্টি হওয়ায় চত্বরে পানি জমে আছে। এতে ওই এলাকা কাদাপানিতে একাকার হয়ে আছে। বৃষ্টির পানি সরানোর জন্য কোনো নালা নির্মাণ না করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে বৃষ্টি হলে যাত্রীদের কাদাপানি মাড়িয়ে বাসে উঠতে ভীষণ সমস্যা হয়। একই কারণে যাত্রীরা টার্মিনালের শৌচাগারেও যেতে পারছেন না। যাত্রীরা অভিযোগ করেন, টার্মিনালের শৌচাগারগুলো নোংরা। কোনো সুস্থ মানুষের পক্ষে শৌচাগার ব্যবহার করা সম্ভব নয়।
শহরের শোলাকিয়া এলাকার চিকিৎসক পীযূষ কান্তি শর্মা, আখড়া বাজার এলাকার মজিবুল হক জানান, সামান্য বৃষ্টিতেই টার্মিনালের চত্বরে পানি জমে থাকে। কাদাপানি ভেঙেই তাঁদের বাসে উঠতে হয়।
পৌর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯০ সালে টার্মিনালটি নির্মাণ করা হয়। ওই বছরই পৌরসভা টার্মিনালের দায়িত্ব নেয়। দীর্ঘ ২০ বছরে ইজারার মাধ্যমে পৌরসভা প্রায় কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি শাহজাহান লস্কর জানান, রাজস্ব আয়ের টাকা দিয়ে কর্তৃপক্ষের উন্নয়ন করার কথা। বারবার বলা ও লিখিতভাবে আবেদন করার পরও কাজ হচ্ছে না। ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। প্রতিদিন এখান থেকে তিন শতাধিক বাসে কয়েক হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন।
পৌরসভার নীতিমালা অনুযায়ী হাটবাজার ও বাস টার্মিনাল ইজারা দিয়ে যে টাকা পাওয়া যাবে, তার একটি অংশ এগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। এ ব্যাপারে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক বলেন, ‘বিষয়টি অবশ্যই দেখব।’
পৌর মেয়র আবু তাহের মিয়া বলেন, ‘আর্থিক সংকট থাকায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বে টার্মিনালের উন্নয়নের কাজ করতে পারছি না। তবে কয়েক দিনের মধ্যে পুরোনো ইট বিছিয়ে দিয়ে আপাতত যাত্রীদের বাসে ওঠার ব্যবস্থা করা হবে। পরবর্তী সময়ে উন্নয়ন প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করে টার্মিনালের সার্বিক সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।’