কিশোরগঞ্জের দুর্গম হাওর এলাকা ইটনা উপজেলার রায়টুটি ইউনিয়নের আড়ালিয়া এলাকায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে অশ্লীল নাচ ও জুয়ার আসরে বাধা দেওয়ায় পুলিশের ওপর হামলা চালায় একদল গ্রামবাসী। এ সময় এলাকাবাসীর হামলায় আহত হয়েছেন একজন উপপরিদর্শকসহ (এসআই) পুলিশের ১০ জন সদস্য। হামলার ঘটনায় পুলিশের দুটি রাইফেল খোয়া যায়। এলাকাবাসীর সহায়তায় খোয়া যাওয়া রাইফেল দুটি গতকাল বুধবার সকালে উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার গভীর রাতে ইটনা ও তাড়াইল উপজেলার সীমান্তবর্তী আড়ালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ইটনা উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক ইসরাইল হোসেন জানান, আহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে গতকাল সকালে ইটনা থানার এসআই মো. মিজানুর রহমান, এএসআই শামসুল হুদা, কনস্টেবল সলিমুর রহমান ও মইনুদ্দিনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মীর রেজাউল আলম ভোরে ঘটনাস্থল ছুটে যান। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সুপার জানান, প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল আড়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে অশ্লীল নাচ, গান ও জুয়ার আয়োজন করে। খবর পেয়ে রাতে ইটনা থানার এসআই মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ১১ জন পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় শত শত গ্রামবাসী পুলিশের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। তারা পুলিশ সদস্যদের বেধড়ক মারধর করে দুটি রাইফেল ছিনিয়ে নেয়। পরে পরিত্যক্ত অবস্থায় গতকাল সকালে আড়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছন থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে।
খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, ইটনা থানার ওসি আবুল হাশেম, করিমগঞ্জ থানার ওসি এমদাদ আলী, তাড়াইল থানার ওসি আবদুল মালেকসহ র্যাব এবং দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি কিংবা পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। পুলিশের গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন আড়ালিয়াসহ আশপাশের এলাকার পুরুষেরা।
ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল হাসেম জানান, এ ঘটনায় আড়ালিয়া গ্রামের সব পুরুষ পালিয়ে গেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে বুধবার রাতের মধ্যেই পুলিশ বাদী হয়ে একাধিক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
-প্রথম আলো