দলীয় কোন্দল আর গ্রুপিংয়ের কারণে কিশোরগঞ্জে ১৪ বছরেও বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়নি। একের পর এক কমিটি ভেঙে কোনো রকমে জোড়াতালি দিয়ে চালানো হচ্ছে দলের কার্যক্রম। নেতৃত্বের কোন্দলের কারণে সাধারণ কর্মী-সমর্থকরাও বিভক্ত এবং অনেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন।
১৯৯৩ সালে কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান ভূইয়াকে সভাপতি, মো. মাসুদ হিলালীকে সাধারণ সম্পাদক ও জাহাঙ্গীর আলম মোল্লাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়েছিল। কমিটি গঠনের কিছুদিন পর সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন পৃথকভাবে দলীয় কার্যক্রম শুরু করলে কোন্দলের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এ অবস্থায় কমিটি ভেঙে দিয়ে ১৯৯৬ সালে মেজর আখতারকে আহ্বায়ক করে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি দায়িত্ব পালনকালে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও দলের নীতি আদর্শ নিয়ে মেজর আখতারের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে পর পর চারবার তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে পুনরায় তাকে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু কোন্দল নিরসন না হওয়ায় ১৯৯৮ সালে এ কমিটি ভেঙে সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান মঞ্জুকে আহ্বায়ক করে পুনরায় একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
এরপরও কোন্দল নিরসন হয়নি। দীর্ঘদিনেও এ কমিটি সম্মেলন করতে না পারায় ২০০৫ সালের ২০ জুন এ কমিটিও ভেঙে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. এম. ওসমান ফারুককে সভাপতি ও ওয়ালীউল্লাহ রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যের একটি জেলা কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। কিন্তু এ দুই সদস্যের দুইজন দুই মেরুতে অবস্থান নেওয়ায় তারাও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেননি। পরবর্তীতে ওয়ান-ইলেভেনের প্রেক্ষাপটে ড. ফারুক একেবারেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় দলের কার্যক্রম রাব্বানীর মাধ্যমেই পরিচালিত হতে থাকে। এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় কমিটি জেলা কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করে ২০০৯ সালের ৮ জুন দলে নবাগত অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানকে আহ্বায়ক করে ৬৭টি সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে।
কিন্তু কমিটি গঠনের প্রায় এক বছর অতিবাহিত হলেও এ কমিটি একটি সভাও করতে পারেনি বলে দলের একাধিক নেতা অভিযোগ করেছেন। দলীয় কোনো কর্মসূচি পালন করতেও ফজলুর রহমান কিশোরগঞ্জে আসেননি বলে অনেক নেতা-কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ সময়ে নেতৃত্বের কোন্দল এমন পর্যায়ে পৌঁছে, ফজলুর রহমান ৩০ নভেম্বর জেলা সম্মেলনের ঘোষণা দিলে পৃথকভাবে অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে আরেকটি গ্রুপও একই দিন তলবী সভা আহ্বান করে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।