মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষলগ্নে ১৯৭১-এর ৩ ডিসেম্বর প্রথম দেশ হিসাবে ভূটান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। পরবর্তী দেশ হিসাবে ভারত ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ (মতান্তরে ৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।
এশিয়ার বাহিরে প্রথম স্বীকৃতিদানকারী দেশ ছিল পূর্ব-জার্মানি ১১ জানুয়ারী ১৯৭২, তারপর বুলগেরিয়া ১২ জানুয়ারী, এবং রাশিয়া-সহ বাকী সোভিয়েত ব্লক দেয় ২৫ জানুয়ারী, ১৯৭২। প্রথম পশ্চিমী দেশ হিসাবে জিবি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় ৪ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭২। ১৯৭২-এর ২৫শে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত বাংলাদেশ ৩০ দেশের স্বীকৃতি লাভ করে। মুসলিম দেশের মধ্যে মালেশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া ২৫ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭২ স্বীকৃতি দেয়। প্রথম আরব দেশ হিসবে ইরাক স্বীকৃতি দেয় ৮ জুলাই, ১৯৭২। প্রথম আফ্রিকান দেশ সেনেগাল স্বীকৃতি দেয় ফেব্রুয়ারী ১৯৭২। অন্যান্য দেশের মধ্যে নেপাল ১৬ জানুয়ারী ১৯৭২, ক্যানাডা ১৪ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২, জাপান মার্চ ১৯৭২, উএসএ এপ্রিল ১৯৭২-এ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় । এখানে উল্লেখিত যে ইসরাইল জানুয়ারী ১৯৭২-এ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে চেয়েছিলো, যা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রত্যাকৃত হয়।
বাংলাদেশ কমনঅয়েলথ ভুক্তদেশ হয় ১৯৭২-এ, যে কারণে (বাংলাদেশের স্বীকৃতি বিষয়ে) ৩০ জানুয়ারী ১৯৭২ পাকিস্তান সদস্যপদ ত্যাগ করে, পরে ১৯৭৫-এ আবার ফিরে আসে। পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় ১৯৭৪-এর ২২ ফেব্রুয়ারী, যদিও পাকিস্তান বাংলাদেশে দূতাবাস খুলে ১৯৭৬-এ, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পরে।
পাকিস্তানের স্বীকৃতির পর ১৯৭৪-এর ২৩ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশ ওআইসি ভুক্তদেশ হয়। ১৯৭৪ পর্যন্ত চীনের বিরুধীতার কারণে বাংলাদেশের জাতিসংঘে অন্তর্ভুক্তি সম্ভব হয়নি, পাকিস্তানের স্বীকৃতির পর একই বছরের ৭ জুন বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব গৃহীত হয়, তার ফলস্বরূপ ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪-এ বাংলাদেশ UN-এর সদস্যপদ লাভ করে।
মার্চ ১৯৭৩ পর্যন্ত, ৯৮ দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিলো। বঙ্গবন্ধুর হত্যার আগ পর্যন্ত ১০৪ দেশ (প্রায় সবদেশ সৌদি আরব ও চীন ছাড়া) বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিলো। অবশেষে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ১৯৭৫-এ সৌদি আরব ও চীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। চীন স্বীকৃতি দেয় ৮ অক্টোবর ১৯৭৫। সৌদি আরবের না দেয়ার কারণ হিসাবে ‘হিন্দুদেশের মদদে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশকে ভাঙ্গার’ আর ‘অখন্ড পাকিস্তান নীতি’ চীনের কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়।
You must log in to post a comment.