গ্রামে দাদমর্দনের তেমন কদর নেই। কারণ এই গাছে কোনো সুমিষ্ট ফল হয় না, কাঠও মূল্যহীন। নিতান্তই গুল্মশ্রেণীর গাছ। ময়লার ভাগাড় কিংবা পরিত্যক্ত স্থানে আপনাআপনিই জন্মে।কিন্তু শহরে এর অনেক দাম। বিভিন্ন উদ্যানে রোপণ করা হয় পৌষ্পিক ঐশ্বর্য উপভোগ করতে, না হয় ঔষধি গাছ হিসেবে সংরক্ষণের প্রয়োজনে।
তবে, সবকিছু ছাপিয়ে এই ফুলের নজরকাড়া রূপই আমাদের মন ভরিয়ে দেয়। ইদানীং অবশ্য আলংকারিক পুষ্পবৃক্ষের জন্যই বিভিন্ন উদ্যানে রোপণ করা হচ্ছে। খাড়া পুষ্পদণ্ডে হলুদ সোনালি রঙের অসংখ্য ফুল আপনার মনকে আলোড়িত করবে। ঢাকায় শিশু একাডেমীর বাগান ও রমনা নার্সারিতে কয়েকটি গাছ দেখা যায়।এরা ক্যাশিয়া জাতের ফুল। আমাদের দেশে ক্যাশিয়ার আরেকটি বুনো জাতের নাম কালকাসুন্দা। পথের ধারে ও পাহাড়ে অঢেল দেখা যায়। দাদমর্দন কখনো কখনো ডোবার ধার, খেতের মধ্যবর্তী আল এবং অনাবাদি স্থানেও জন্মায়।
সারা দেশে মূলত ঔষধি গাছ হিসেবেই এরা পরিচিত। বিশেষ করে চর্মরোগে এই গাছ ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। তবে দাদ ও পাঁচড়ায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহার্য। এখানে দাদের বাহ্যিক নিরাময়ের জন্য টাটকা পাতার লেই ব্যবহার করা হয়। আবার ঝলসানো পাতাও রেচক। এসব ছাড়াও যৌনরোগ চিকিৎসায় এবং বিষাক্ত পোকামাকড়ের কামড়ে এই গাছ সাধারণত টনিক হিসেবে কাজে লাগে। ব্যাপক বৃদ্ধি ও বিস্তারের ফলে বর্তমানে নিউগিনিতে আগ্রাসী প্রজাতির বৃক্ষে পরিণত হয়েছে।
দাদমর্দন দ্রুত বর্ধনশীল নরম-কাষ্ঠল গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। সাধারণত এক থেকে দুই মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। কাণ্ড পুরু ও হলদেটে। ফুল ফোটার মৌসুম সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি। ডালের আগায় ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার খাড়া ডাঁটায় হলুদ রঙের ফুল নিচ থেকে ওপরের দিকে ফোটে।
-মোকারম হোসেন