আমার এক স্বজন মনোকষ্টে অনেক ক্ষোভের কথা বলেছে অনেক আগে।  বসন্তকালে ভ্রমণ,নিম্বতোজন এবং তন্বীর সান্নিধ্য-এই তিনটির অভাব হলে তাঁর মরণই ভালো। আমিই সেই নিম্ব বা নিম। আমার বৈজ্ঞানিক নাম-Azadirachta indica আমাকে তোমরা অতি সসহজেই চিনতে পারবে। আমার  অনেক সম্বলকৃত নাম আছে। যেমন-প্রভদ্র, কীরেষ্ট, সর্বতভদ্র, ধমন, পবনেষ্ট, পীতসারক, বরতিক্ত, জ্যেষ্ঠামলক, হিঙ্গুনির্যাস, অগ্নিধমন। আর আমার ঔষধীগুনের কথা বলছো? সে তো বলে শেষ করা যাবেনা।

চরক, সুশ্রুত, হারিত, বাগভাট, চক্রদত্ত, বঙ্গসেন তো রেখে গেছেন ভুরি ভুরি সব বৈদ্যক উপদেশ। আর নব্যের সমীক্ষায় তা আরো বিস্তৃত। আমার ছাল, পাতা, ফল,তেলে আছে প্রচুর পরিমান পদার্থ স্যাপেনিন, আলকালয়েডস। যেমন-নিমবিন, নিমবেসিটিন। আর তেলে আছে মারগোসিক এসিড। আমার এসব পদার্থের প্রধান প্রধান গুনের রয়েছে বিরাট ফিরিস্তি। সংক্ষেপে বহুরকম জীবানুনাশক শক্তিধর-দাঁতের রোগ, খোস-পাঁচড়া বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ, কুষ্ঠ, এমনকি আমার তেল-বাত, নানা রকম বিষনাশক হিসেবেও বেশ ফলপ্রসূ।

সবচেয়ে বড় আনন্দের কথা-দিন দিন খুব দ্রুত আমার বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে এবং তা বিস্তার লাভ করছে। তবে তোমাদের দেশে নয়-আমেরিকা দক্ষিন ইউরোপ, অষ্ট্রেলিয়া এমনকি মধ্যপ্রাচ্যেও। আমার শুকনো পাতার গুড়ো এখন আমেরিকাতে ফসলের কীটনাশক হিসেবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কারণ পরিবেশের কোন ক্ষতি না করেই আমার পাতার রাসায়নিক পদার্থ কীট পতঙ্গকে পঙ্গু করে দেয়।সবশেষে বলছি –আমার ফলের গন্ধ আকর্ষনীয় না হলেও শেষ বসন্তে আমার ছোট ছোট ফুলের সৌরভ মনোমুগ্ধকর।

-ডঃ নওয়াজেশ আহমদ