বিশাল গাছের সিঁদুরলাল ফুল পালান অসাধারণ। ডিম্বাকৃতির উজ্জ্বল সবুজ পাতা। ফুলের পাপড়ি ছোট, সংখ্যায় পাঁচ ও আকারে গোল। ফুলের গন্ধ দূর থেকে টানে না, তবে নাকের কাছে নিলে ঝট করে লাগে। কেমন মন উথাল-পাতাল করা গন্ধ। ফুলের ওপর মাছি সারাক্ষণ ভোঁ ভোঁ করে উড়ে বেড়ায়।ডালের ডগায় চার থেকে পাঁচটি ফুল একত্রে ফোটে। বসন্তের শেষ ও গ্রীষ্মের শুরুতে ফুল আসতে শুরু করে। মে মাসের পর আর ফুল থাকে না।পালানের উদ্ভিদবিজ্ঞানীয় নাম Wrightia coccinea। পরিবার Apocynaceae। প্রচলিত নাম Scarlet Wrightia।

ফুলটি দেখার পর কেউ কেউ প্রশ্ন করেছিলেন, পালান নামটি কি বাংলা? এর অর্থই বা কী? এ নিয়ে দ্বিজেন শর্মার শরণ নিলে তিনি বললেন, ‘একে কেউ পালান বলে, আবার কেউ বলে পালাম। এটি সিলেটের আঞ্চলিক নাম। এই নাম মানুষের মুখ থেকে আসা। কিন্তু নামের ইতিহাস বা অর্থ আমার জানা নেই।’বলি, নামে কী আসে যায়! পালান হোক আর পালাম হোক, এর সৌন্দর্য তো অসাধারণ। সিলেট অঞ্চলে, বিশেষত পাথারিয়া পাহাড় ও ভারতের পাহাড়ি বনে পালানের দেখা মেলে। মূলত বাংলাদেশ ও ভারতের নিজস্ব গাছ এটি।রমনা নার্সারির ভেতরে দাঁতরাঙা, গন্ধরাজ, ঝুমকোলতা, করবী, কুন্দ, চামেলি, মান্দার, মালতী, গোলাপ আর স্থলপদ্মের ঘ্রাণে সুবাসিত হয়ে এগোতে থাকলে কুর্চির ঠিক উল্টো দিকে যে গাছটি নজর কাড়বে, তার নাম পালান। সিঁদুররাঙা এর ফুলও বেশ নজর কাড়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, গাছটি উদ্ভিদবিজ্ঞানী দ্বিজেন শর্মা সিলেটের পাথারিয়া পাহাড় থেকে এনে এখানে রোপণ করেছিলেন। দিনে দিনে গাছটি বড় হয়েছে, ফুল ফুটেছে।পালানের দেখা রমনার নার্সারিতেই প্রথম। পরে সিলেটের জৈন্তাপুর খাসিয়া সংঘের সভাপতি বিশ্বজিৎ সুমেরের বাড়িতে বেড়াতে গেলে খাসিয়া পাড়ার ভেতর এবং এর আশপাশের বনাঞ্চলে অনেক পালান গাছের দেখা পাই।

-Prothom alo