ভুল করে মধুমালতী বা মধুমঞ্জরিকে মাধবী নামে ডাকা হয়। কিন্তু বাস্তব মাধবী (Aganosma dichotoma) নিতান্তই দুষ্প্রাপ্য। আছে গানে-আর বনে। জানামতে রমনা পার্ক, শিশু একাডেমির বাগান ও বলধা গার্ডেনে আছে। প্রস্ফুটন স্বল্পকালীন। ‘মাধবী হঠাৎ কোথা থেকে এলো ফাগুন-দিনের স্রোতে/ এসে হেসেই বলে ‘যাই যাই যাই’। কাষ্ঠলতা, ছড়ান, পত্রনিবিড়, শীতে পাতা ঝরায়। পাতা ভল্লাকার, ১০-১৬ সেমি. লম্বা, চার্ম, বিন্যাস বিপ্রতীপ। ফুল বসন্তের বার্তাবহ। প্রায় নিষ্পত্র ডাল ভরে থোকা থোকা সুগন্ধি সাদাটে প্রায় ৩ সেমি. লম্বা ফুল ফোটে। পাপড়ি সংখ্যা ৫, ৪টি সমান ও সাদা, ১টি ছোট ও হলুদ। ভারি সুগন্ধি, ভ্রমরাও উতলা হয়। সিলেটের বনে আপনিতেই জন্মায়। শুকনো ফলগুলো ভারি মজার-তিনটি পাখা মেলে দিব্যি হাওয়ায় ভেসে বেড়ায়। মাধবী নিয়ে রবীন্দ্রনাথের গান কবিতা থেকে কয়েকটি উদ্ধৃতি:
# মাধবিকা হোক সুরভি সোহাগে, মধুপের মনোহরা।
# বসন্তের জয়রবে, দিগন্ত কাঁপিল যবে, মাধবী করিল তার সজ্জা।
মালতী, একপ্রকার উদ্ভিদ, যা তার ফুলের জন্য আদৃত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Aganosma dichotoma এটি Apocynaceae (Oleander family) পরিবারের একটি উদ্ভিদ। এই ফুলের অন্যান্য নামের মধ্যে Malati, Clove scented echites, Malati Paalamalle, Mogari, Gondhomaloti, Maalatilata ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। অন্যান্য প্রজাতির মধ্যে রয়েছে Echites caryophyllata। ভারতবর্ষের অনেক জায়গায় এটি পাওয়া যায় আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে এর ব্যবহার আছে। এর আয়ুর্বেদিক নাম হচ্ছে মধুমালতি।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের লেখায় মালতীলতার নাম এসেছে বার বার। এটিকে অনেকেই মধুমঞ্জরীর (Quisqualis indica) সাথে গুলিয়ে ফেলেন কিন্তু বস্তুত দুটি আলাদা আলাদা ফুল। মালতীলতার রং হয় সাদা এবং মধুমঞ্জরীর রং হয় সাদা, লাল বা গোলাপী। এই ফুলগুলো গুচ্ছ গুচ্ছ হয়ে ফুটে থাকে। পাঁচ পাপড়িবিশিষ্ট ফুলগুলো দেখতে যথেষ্ট মনোহর।