বিশ্বব্যাংকের ‘ব্যবস্থাপত্রের’ বিরোধিতা করে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার ব্যাংকের অলাভজনক গ্রামীণ শাখাগুলো বন্ধ না করার সুপারিশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। মঙ্গলবার কমিটির ২৭তম বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।
লোকসানি ব্যাংক শাখাগুলো গ্রহীতাদের কাছে নির্বিঘ্নে রেমিট্যান্স পৌঁছে দিতে পারলে সেগুলোকে লাভজনক করে তোলা সম্ভব বলে জানান অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ এইচ এম মোস্তফা কামাল। সংসদ ভবনে কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনার উন্নতি হয়েছে বলে বৈঠকে অভিমত দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত এই চারটি ব্যাংকের দেশজুড়ে বিশাল ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক রয়েছে। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চারটি ব্যাংকের লোকসানি শাখাগুলো বন্ধ করে দেওয়ার মত রয়েছে। কিন্তু এ সবের কোনোটাই বন্ধ না করার জন্য সুপারিশ করেছে কমিটি।”
তিনি জানান, ২০১০-২০১১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আয় ১,২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। গত অর্থবছর ৯০০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আয় হয়। মোস্তফা কামাল জানান, ব্যাংকগুলোর ঋণ আদায়ের পরিমাণ বেড়েছে। এছাড়া তাদের ভালো ব্যবস্থাপনার কারণে খেলাপী ঋণের পরিমাণও কমে এসেছে। ব্যাংকিং খাত সংস্কারের অংশ হিসাবে বিশ্বব্যাংক সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের অলাভজনক শাখাগুলো বন্ধ করে দেওয়ার জন্য সরকারকে চাপ দিচ্ছে। দেশের সবচেয়ে বড় সোনালী ব্যাংকের দেশজুড়ে ১,১৮৪টি শাখা রয়েছে। এর মধ্যে গ্রামাঞ্চলে ৮৪১টি ও শহরে রয়েছে ৩৪১টি শাখা।
জনতা ব্যাংকের মোট শাখা ৮৪৬টি। এর মধ্যে ৪০৭টি গ্রামাঞ্চলে ও ৪৪০টি শহরে। অর্থমন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাংকের ‘প্রেসক্রিপশন’ অনুযায়ী সরকার ২০০২ ও ২০০৩ সালে জনতা ব্যাংকের অলাভজনক ৫৫টি শাখা বন্ধ করে দেয়। দেশে অগ্রণী ব্যাংকের শাখা রয়েছে ৮৬৭টি ও রূপালী ব্যাংকের ৪৯২টি। বিশ্বব্যাংকের সুপারিশ অনুযায়ী, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অগ্রণী ও জনতা ব্যাংককে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত করে।