চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোট কেন্দ্রগুলোয় বাড়ছে ভোটার উপস্থিতি। সবচেয়ে বেশি ভোটার উপস্থিতি জামালখানের ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ই-ভোটিং এলাকায়।
ভোটকেন্দ্রগুলোতে নারী ভোটারদের উপস্থিতিই অপেক্ষাকৃত বেশি।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জেসমিন টুলী জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার তথ্য পাওয়া যায় নি।
ডা. খাস্তগীর বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে এই কর্মকর্তা আশা প্রকাশ করেন, রোদেলা আবহাওয়ার কারণে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়তে থাকবে।
সিএমপির সহকারী পুলিশ কমিশনার কাজী হেলালউদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিনি সকালে ভোটগ্রহনের সময় থেকে সকাল সোয়া ১১ টা পর্যন্ত ৬০ টি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শণ করেছেন। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
আঞ্চলিক লোক প্রশাসন ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমগীর সকাল সাড়ে ১০ টায় বলেন, “আটটায় ভোটার উপস্থিতি অপেক্ষাকৃত কম থাকলেও ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ভোটার উপস্থিতি। প্রায় আড়াই হাজার ভোটারের এই কেন্দ্রে প্রথম ঘণ্টায় ১৬০টির বেশি ভোট নেওয়া হয়েছে।”
৬৯ বয়সী ভোটার একরামুল হক জানান, ভোট দিতে কোনো অসুবিধা হয় নি। কেন্দ্রে আসতেও কেউ বাধা দেয় নি।
কদম মোবারক এম ওয়াই স্কুল ভোট কেন্দ্রে ভোটার মেহেরুন্নেছা জানান, সকাল ৮ টার পর এই কেন্দ্রে তিনি দ্বিতীয় ভোটার হিসেবে ভোট দিয়েছেন। সকালের দিকে ভোটারের উপস্থিতি ছিল কম।
প্রিজাইডিং কর্মবর্তা শান্তনু বড়�য়া মনে করেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে ভোটার উপস্থিতি।
কুসুম কুমারি স্কুল ভোট কেন্দ্রে মেয়র প্রার্থী এবিএম মহিউদ্দিনের এজেন্ট কুমকুম দত্ত জানান, ভোটকেন্দ্রে কোনো ধরনের ঝামেলা নেই। আরেক প্রার্থী মনজুর আলমের এজেন্ট জেসমিনও একই কথা বলেন।
এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ফরমাজুল হক বলেন, “ভোটার উপস্থিতি বেশ। ই ভোটিং-এর কারণে স্বল্প সময়েই ভোটাররা নিজের ভোট দিচ্ছেন।”
চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে নতুন ভোটার মোহাম্মদ হাসান বলেন, “প্রথম ভোট দিলাম। আনন্দ উৎসবের আমেজ নিয়ে ভোট দিচ্ছি।”
ফয়’স লেক নূর-ঈ মাদ্রাসা কমপ্লে�ক্সে সকাল থেকে নারী ভোটাররা ভোট দিচ্ছেন।
শাহনাজ বেগম, মনজুমা বেগম, মুনমুন আখতার জানান, তারা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পেরেছেন।
নেছারিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্র, পাহাড়তলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ফয়েজ আলী চৌধুরী মেমোরিয়াল আদর্শ কেন্দ্র উপস্থিতি বেশ।
চট্টগ্রাম গভর্নমেন্ট কমার্শিয়াল ইন্সটিটিউট কেন্দ্রে সকাল থেকে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। এখানে পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারের উপস্থিতি বেশি।
ভোটার আমেনা বেগম জানান, ভোট দিতে পেরেছেন তিনি ভালোভাবে।
পূর্ব ষোল শহর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোট কর্মকর্তা হাবিবুল রসুল বলেন, “চারটি কেন্দ্রে ১২ হাজার ভোটার রয়েছে। প্রথম দুই ঘণ্টায় ২৫ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে তিনি ধারণা করেন।
আন্দরকিল্লা কো-অপারেটিভ সমবায় ব্যাংক, মুসলিম হাই স্কুল কেন্দ্রেও ভোটারদের ছিল বেশ।
ই-ভোটিং
ব্যাপক সাড়া পড়েছে দেশে প্রথমবারের মতো চালু হওয়া ই-ভোটিং এলাকায়।
৮০ বছর বয়সী রত� বালা বড়�য়া ভোট দিয়ে এসে জানান, এ জীবনে এতো সহজে আর কোনো ভোট দেননি তিনি। অনেকবার ভোট দিয়েছেন। কিন্তু এবার শুধু প্রার্থীর মার্কা দেখে বোতামে টিপ দিয়েছেন। এতে ভোট নেওয়া হয়ে গেছে।
ডা. খাস্তগীর বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ইফতেখারুল ইসলাম জানান, ভোট দিতে ভোটারদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। যারা জানেন না, তাদের সহায়তা করছেন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা।
ভোটার ইশরাত জাহান চৌধুরী, নুশরাত জাহান চৌধুরী নতুন এ পদ্ধতিতে ভোট দিয়ে বেজায় খুশি।
দীপক চৌধুরী ও অনিতা চৌধুরী দম্পতি ভোট দিয়ে বলেন, “খুব কম সময় লাগল। জাল ভোটের তো কোনো সুযোগ নেই। সারাদেশেই এ ধরনের ভোটিং চালু করা উচিত।”
ছালেহ জোহর সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়, শিশুবাগ স্কুল, শাহ ওয়ালিউল্লাহ ইনস্টিটিউট, ন্যাশনাল প্রাইমারি স্কুল কেন্দ্রেও ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
সহকারি রিটার্নিং কর্মকতা দুলাল তালুকদার বলেন, “আমরা সারাক্ষণ পর্যবেক্ষণ করছি। ভোটারদের সাড়া পাচ্ছি বেশ। উপস্থিতিও উৎসাহব্যাঞ্জক।”
ইভিএম সরবরাহকারী কর্তৃপক্ষ বুয়েটের অধ্যাপক এসএম লুৎফুল কবির জানান, এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের ঝামেলা হয়নি। সারাক্ষণ মনিটরিং করা হচ্ছে ভোটকেন্দ্রগুলো।
২১ নম্বর ওয়ার্ডে ২৫ হাজার ২৩০ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ১২ হাজার ৮৭৯ এবং মহিলা ১২ হাজার ৩৫১ জন।
৭৯টি ভোটকক্ষের জন্য ৭৯টি এবং প্রতি ভোটকেন্দ্রের জন্য অতিরিক্ত একটি হিসেবে ১৪টিসহ ৯৩টি ইভিএম-এ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নাম ও প্রতীক যুক্ত রয়েছে।