একটি গরু মানুষের মতোই টিউবওয়েল চেপে জলপান করে! খায় চিঁড়া-মুড়ির মতো মনুষ্য খাবার। শুধু তা-ই নয়, ধূমপানের বদভ্যাসও আছে চারপেয়ে প্রাণীটির! না, মোটেও গুলপট্টি নয়, সত্যিই এমন আজব এক গরুর দেখা মিলেছে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলায়। এত দিন যাঁরা মানুষকে গরু বলে খোঁটা দিতেন, সেই গরু দেখার পর তাঁরাও জিভ কাটছেন এখন।গরুটির মালিক নূর হোসেন সিদ্দিকী। কাজ করেন লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার খাদ্য গুদামে। ওই গুদামের মাঠেই গরুটিকে লালন-পালন করেন তিনি।

‘১৯ মাস আগে জন্ম নেওয়া এই বলদ গরুটি মাস তিনেক আগে অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। তা দেখে বিস্মিত হয়ে পড়ি আমরা সবাই। একদিন বলা নেই-কওয়া নেই বাড়ির আঙিনার দড়িতে শুকাতে দেওয়া কাপড়গুলো গোগ্রাসে গিলে ফেলে বলদটি। ধীরে ধীরে গরুটি তার স্বাভাবিক খাবার—ঘাস, লতাপাতার দিক থেকে মুখ সরিয়ে বাড়ির কাপড়চোপড় থেকে শুরু করে ভাত, চাল, সিগারেট, চট ইত্যাদি খাওয়া শুরু করে দেয়!’ পোষা গরুটি সম্পর্কে বলছিলেন নূর হোসেন।

তবে গরুটির অমন আচরণে নূর হোসেন একদিন অতিষ্ঠ হয়ে গরুটিকে বেঁধে রাখা শুরু করেন। কিন্তু মুহূর্তেই সেই দড়িও খেয়ে ফেলে কাপড়ের দিকেই ছুটতে থাকে প্রাণীটি। অবশেষে নূর হোসেন বাধ্য হয়ে লোহার শেকল দিয়ে টিউবওয়েলের পাশেই সেটিকে বেঁধে রাখতেন সারা দিন।

মাস খানেক আগের কথা। এক দুপুরবেলায় নূর হোসেন দেখতে পেলেন, বালতিতে পানি দিলেও গরুটি তা পান না করে মাথা দিয়ে টিউবওয়েলের হাতলে চাপ দিয়ে জলপান করছে! এবং যতবারই গরুটির জলতেষ্টা পায় ঠিক ততবারই নিজে থেকেই মাথা দিয়ে টিউবওয়েল চেপে পানি বের করে পান করতে লাগল!বিষয়টি দেখে নূর হোসেন মহা চিন্তায় পড়ে গেলেন। দু-একজনকে জানালেনও বিষয়টি। কিন্তু সবাই অবাক হওয়া ছাড়া আর কিছুই বলতে পারল না।

এভাবে একে দুয়ে পুরো পাড়া, পাড়া থেকে উপজেলায় ছড়িয়ে গেল গরুর জলপানের খবর। এরপর নূর হোসেনের বাড়িতে শুরু হয়ে গেল উৎসুক মানুষের আনাগোনা। পাড়ার নানাজন নানা মত দেওয়া শুরু করল

-প্রথম আলো