এক মাস রোজার পর আজ দেশজুড়ে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর।সকালে ঈদের নামাজ পড়তে নানা বয়সীরা ঈদগাহ আর মসজিদে যান। ঈদের নামাজ শেষে ধীরে ধীরে শুরু হয় পারিবারিক ও সামাজিক দেখা-সাক্ষাত পর্ব। নামাজে যাওয়ার আগেই মুসল্লিরা দুঃস্থ-দরিদ্রদের সাহায্য বা ‘ফিতরা’ দেন।

এবার ৩০ রোজা শেষে বাংলাদেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। গত বছর ২৯ রমজান শেষে বাংলাদেশে ঈদ পালিত হয়। শনিবার রাজধানীতে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় হাইকোর্ট লাগোয়া জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে সকাল সাড়ে ৮টায়। এতে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান, প্রধান বিচারপতি ফজলুল করীম, স্পিকার আবদুল হামিদ, ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, মন্ত্রিসভার সদস্যবর্গ, সাংসদ, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিক, সরকারি ও সামরিক বাহিনীর উর্ধবতন কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদসহ সর্বস্তরের নাগরিকরা অংশ নেন।

জাতীয় ঈদগাহে প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ কামনা করা হয় নামাজের মোনাজাতে। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ডিসিসির উদ্যোগে এবার মহানগরীর ৯০টি ওয়ার্ডে ৩৬১টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ঈদের নামাজের পর বঙ্গভবনে সকাল সাড়ে ১০টায় রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুুর রহমান এবং সকাল সাড়ে ৯টায় শেরে বাংলা নগরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কূটনীতিক, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এছাড়া বেলা পৌনে ১২টায় ইস্কাটন গার্ডেনের লেডিস ক্লাবে বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। প্রথমে কুটনীতিকদের সঙ্গে পরে সর্বস্তরের মানুষজনের সঙ্গে কুশল বিনিয়ম করেন তিনি ।

ঈদ উপলক্ষে রাজধানীকে মনোরম সাজে সাজানো হয়েছে। বঙ্গভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জাতীয় সংসদ ভবন, সচিবালয়, সুপ্রিমকোর্ট, হাইকোর্টসহ রাজধানীর সরকারি ও বেসরকারি ভবনে ভোরে উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকা। ঢাকার বনানী গেইট থেকে শুরু করে বঙ্গভবন পর্যন্ত প্রধান সড়ক ও সড়ক দ্বীপগুলোর দুই প্রান্ত জাতীয় পতাকা এবং বাংলা ও আরবীতে ‘ঈদ মোবারক’ লেখা পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হয়।

ঈদের দিন হাসপাতাল, এতিমখানা ও কারাগারে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়। কেন্দ্রীয় কারাগারসহ সব কারাগারগুলোতে আলাদা জামাতেরও ব্যবস্থা করা হয়। ঈদ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া পৃথক পৃথক বাণীতে দেশবাসীসহ মুসলিম উম্মাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন।