কালাপাশ চুটকি বা Dark-sided Flycatcher। বৈজ্ঞানিক নাম Muscicapa fuliginosa।কালাপাশ চুটকি বাংলাদেশের বিরল পরিযায়ী পাখি। ঢাকা, সিলেট ও খুলনা বিভাগের বনে এদের দেখা যায়। এ যাবৎ যে কয়বার পাখিটি দেখা গেছে, প্রতিবারই সময় ছিল অক্টোবরের শেষ দিকে। এ প্রসঙ্গে ইনাম আল হক বললেন, ‘এবারই বিরল এই পাখিটি প্রথম অসময়ে (২৫ আগস্ট) রমনা পার্কে দেখা গেল। এটি প্রধানত অক্টোবর মাসে আমাদের দেশে আসে।’

বাংলাদেশ ছাড়া ভারত, ভুটান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, চীন, তিব্বত, জাপান, রাশিয়ায় এই পাখি দেখা যায়।এটি দাগি পেট ও ধূসর-বাদমি পিঠের ছোট্ট পোকা শিকারি পাখি। দেহের দৈর্ঘ্য ১৩ সেন্টিমিটার। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির শরীরের পেছনের অংশ ধূসর-বাদামি এবং প্রাথমিক অভিক্ষেপ দীর্ঘ। পেটের মাঝখানে নিচে সরু সাদা টান থাকে। ঠোঁট কালো ও গোড়া প্রশস্ত। চোখ বড়, কালচে-বাদামি এবং চোখের বলয় ফিকে। পায়ের পাতা ও নখর কালো। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহ মলিন, বাদামি, তিলা-পিতাভ; বুক ও বগলে কালচে রঙের ছাপ থাকে।

কালাপাশ চুটকি সাধারণত নাতিশীতোষ্ণ, আলপ্স পাহাড়ে, কনিফার বনের ধারে, ওক বনে বিচরণ করে। সাধারণত বড় পত্রবহুল বন এদের প্রিয়। শীতকালে সমতলে নেমে আসে। শীতের আবাসে একাকী থাকে। খাদ্যের তালিকায় আছে উড়ন্ত পোকা। আলো নিভে যাওয়ার পরও এরা পোকা ধরে খায়। মাঝে মাঝে কোমল সুরে সি-সি-সি করে ডাকে।

মে-জুলাই মাসে মাকড়সার জাল, শেওলা দিয়ে গাছের শাখায় বাসা করে। বাসা দেখতে বাটির মতো। ডিম সবুজ, সংখ্যায় তিন-চারটি। মেয়ে পাখি একা ডিমে তা দেয়। ছেলে পাখি তার আহার জোগায়। ছেলে ও মেয়ে পাখির চেহারা অভিন্ন। আমাদের দেশে ১৬ প্রজাতির চুটকি পাওয়া যায়, যাদের সবাই পরিযায়ী।

-prothom alo