কিশোরগঞ্জের হাওর-অধ্যুষিত নিকলী উপজেলায় গত শনিবার বিকেলে হয়ে গেল ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতা দেখতে নদীর পাড়ে নেমেছিল লাখো মানুষের ঢল। উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার যৌথ আয়োজনে সোয়াইজনী নদীতে অনুষ্ঠিত হয় এ প্রতিযোগিতা।  প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ পথে এ প্রতিযোগিতা দেখার জন্য উৎসাহী মানুষের পদচারণে মুখরিত নদীর দুই পাড়ে বয়ে গেছে আনন্দের জোয়ার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে নৌকাবাইচ উপভোগ করেন নিকলী-বাজিতপুর নির্বাচনী এলাকার সাংসদ আফজাল হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, জেলা পরিষদের প্রশাসক জিল্লুর রহমান ও জেলা প্রশাসক মো. সিদ্দিকুর রহমান। নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় বড় নৌকার মধ্যে মোহরকোনা গ্রামের ফজলু বেপারী ও তাঁর দল প্রথম স্থান লাভ করে। পরে প্রধান অতিথি বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
জানা গেছে, নিকলীর এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো। এই একটি দিনের জন্য হাওরবাসী সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে বোরো ধান কাটা শেষ হলে শুরু হয়ে যায় নৌকাবাইচের প্রস্তুতি। শুরু হয় পুরোনো নৌকা মেরামত ও নতুন ‘দৌড়ের নাও’ তৈরির কাজ।

আগে প্রতি ভাদ্র মাসের প্রথম দিন এই নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হতো। কালের বিবর্তনে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী অনেক খেলাধুলার মতো নৌকাবাইচও হাওরবাসীর স্মৃতি থেকে মুছে যেতে বসেছিল। কিন্তু দুই বছর ধরে নিকলী উপজেলা প্রশাসন হাওরে হারানো এই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে ভাদ্র মাসের কোনো এক দিন নৌকাবাইচের আয়োজন করে। এবার এই নৌকাবাইচ দেখার জন্য পার্শ্ববর্তী নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ প্রভৃতি জেলা থেকেও লাখো মানুষের সমাবেশ ঘটে। সুত্রঃ প্রথম আলো