বাংলার জলটইটম্বুর বিল ঝিল মাঠ প্রান্তরের অনিবার্য ফুল চাঁদমালা। এদের দেখলেই মনটা আনচান করে। ফিরে যাই শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিময় পথে। দেখি প্রজাপতি উড়ে যাচ্ছে এক ফুল থেকে অন্য ফুলে। সারারাত চাঁদের আলোয় কি দারুণ এক অন্তরঙ্গ উৎসব। রাতটা একটু গভীর হলে পৃথিবীতে জেগে থাকা এসব তারার প্রলোভনে আরো কাছাকাছি নেমে আসে চাঁদ। তখন চাঁদমালাদের আলোর দ্যুতি আরো বেড়ে যায়।

এখানেই নামের সার্থকতা, অসংখ্য চাঁদের সমষ্টিই যেন। এদের প্রাণশক্তিও অফুরন্ত। শুকনো মওসুমে উর্বর মৃত্তিকার ভেতর সযতেœ থেকে যায় বীজগুলো। তারপর প্রাক-বর্ষার বৃষ্টিতেই ফিরে আসে প্রাণচাঞ্চল্য। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে দ্রুততার সঙ্গে জলের ওপর ভেসে ওঠে পাতাগুলো। কয়েক দিন পর ধীরে ধীরে ভেসে ওঠে শাপলা, শালুক, মাখনা ও পদ্মের পাতা। উদ্ভিদবিজ্ঞানে এদের পরিচয় ভিন্ন হলেও অচেনাদের কাছে সমষ্টিগতভাবে শাপলা।

চাঁদমালা অবহেলিত জলজ ফুল। বাংলাদেশ-ভারতের প্রজাতি। লতানো জলজ উদ্ভিদ, শিকড় গজায় গাঁট থেকে। ভাসমান পাতা প্রায় গোল, ৫-৮ সেমি চওড়া, বোঁটা প্রায় ৪ সেমি, ওপরটা মসৃণ, নিচে প্রকট শিরাজাল। ফুল ছোট ও সাদা। পাপড়ি সংখ্যা ৫, কিনারা ঝালরের মতো, কেন্দ্র গাঢ়-হলুদ বর্ণের। ফল গোলাকার। পাতা ঔষধি গুণসম্পন্ন। বৈজ্ঞানিক নাম Nymphoides hydrophylla।

-লিখেছেনঃ মাসুদ