বাংলাদেশে তো বটেই বিশ্বের ইতিহাসেও বিরল ভৈরবে। চিরাচরিত নিয়ম ভেঙ্গে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক অবস্থান থেকে সম্প্রতি পৃথিবীতে এসেছে এক নবজাতক। মায়ের গর্ভ থেকে নয় (জরায়ুর বাইরে)  বরং পেটের ভেতর নাড়ি-ভুড়ির আড়াল থেকে অতিশয় জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বের করা হয়েছে পূর্ণবয়স্ক অর্থাৎ ৩৮ সপ্তাহ বয়সের ফুটফুটে কন্যাশিশুটিকে। এ ধরনের গর্ভধারণকে একটোপিক প্রেগন্যান্সি বলা হয়।

আরও আশ্চর্যের বিষয়টি হলো এখনো পর্যন্ত মা ও শিশু দুজনেই বেশ সুস্থ এবং ভালো আছে। ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে লক্ষ্মীপুরের আবেদীন হাসপাতালে।গত ১৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যার পর এক দীর্ঘ অপারেশনের মাধ্যমে রীতিমতো এক অসাধ্য সাধন করেছেন বিশিষ্ট গাইনি বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. আমিন উদ্দিন আহমদ। প্রসূতির নাম কাকলি বেগম (২০)। তিনি ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের সাধারণ কৃষক সাত্তার মিয়ার সহধর্মিণী। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে আবেদীন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আমিন উদ্দিন আহমদ বলেন, আমার জানা মতে এ ধরনের ঘটনা এটিই প্রথম। তবে এই বিরল ঘটনাটির সফল একটি অপারেশন করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছেন বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অপর এক গাইনি বিশেষজ্ঞ নূসরাত জাহান বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল না হলেও অপারেশনের পর নবজাতককে টিকিয়ে রাখার ঘটনাটি সত্যিই বিরল। তবে তার জানা মতে, দেশে এ ধরনের কোন ঘটনা এটিই প্রথম।সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, বাচ্চাকে কোলে নিয়ে আবেদীন হাসপাতালের বিছানায় বসে থাকা মা কাকলি বেগম এবং তার পাশে স্বামী কৃষক সাত্তার মিয়া ও তার বৃদ্ধা মা নবজাতককে পেয়ে বেজায় খুশি। শিশুটির বাবা সাত্তার মিয়া জানান, এটি তাদের প্রথম সন্তান।