কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার দিগদাইড় ইউনিয়নের করাতি গ্রামে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বিবদমান দুটি পক্ষের সংঘর্ষে করাতি গ্রামের মো. বকুল খান (৩৫) ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। তাঁর বাবার নাম মমরোজ খান।এ সময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। কোবাইদিয়া বিলের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে এমন তথ্য জানিয়েছে স্থানীয় নির্ভরযোগ্য সূত্র।

তাড়াইল থানার পুলিশ ও এলাকাবাসী জানিয়েছে, করাতি গ্রামের মিজানুর রহমান খান পক্ষ একই গ্রামের রফিকুল ইসলাম খান ও সিদ্দিকুর রহমান খান পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। সাম্প্রতিক সময়ে করাতি গ্রামসংলগ্ন কোবাইদিয়া বিলের (জলমহাল) আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে। গতকাল সকাল সাতটার দিকে রফিকুল ইসলাম খান ও সিদ্দিকুর রহমান খানের লোকজন বল্লম, রামদা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে মিজানুর রহমান খানের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা চালায়।

এ সময় সংঘর্ষে মিজান পক্ষের বকুল খান বল্লমের আঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। তাঁর মাথার পেছনের দিকে আঘাত রয়েছে। একই পক্ষের সাব্বির খানকে (৩৯) গুরুতর আহত অবস্থায় কিশোরগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত মমরোজ খান, কাশেম, সাজন আলী খান, নেভী আক্তার, সেবক মিয়া, সিকদার খান, মোমেনা আক্তার, আয়তুল্লাহ খান, সোয়াব মিয়া, আনসার উদ্দিনকে তাড়াইল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। হামলার সময় নিহত বকুল খানের একটি ঘর, সাব্বির খানের ঘরসহ চারটি ঘর ভাঙচুর ও মালামাল লুটপাট করেছে হামলাকারীরা। এ ব্যাপারে মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে বকুলকে খুন করার পাশাপাশি ১৫ জনকে আহত করেছে। এ সময় এরা চারটি ঘর ভাঙচুর ও মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। রফিকুল ইসলাম খান ও সিদ্দিকুর রহমান খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।’

কথা হলে দিগদাইড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, দুটি পক্ষের লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। কোবাইদিয়া বিলের দখলকে কেন্দ্র করে এ বিরোধ সম্প্রতি কঠিন আকার ধারণ করে।তাড়াইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মালেক বলেন, ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। নিহত বকুল খানের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

-prothom-alo