বিশ্বের কোটি কোটি ব্যবহারকারীর চাপে দারুণ বিপাকে এখন ফেসবুক। আর তাই ফেসবুক বন্ধের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে সাইটটির প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুর্কারবাগ। এ সূত্রে ২০১১ সালের ১৫ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যেতে পারে ফেসবুক। সংবাদমাধ্যম সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। জুকারবার্গ সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, দিন দিন ফেসবুক ব্যবস্থাপনা জটিল হয়ে পড়ছে। অনেকটা নিয়ন্ত্রণের বাইরেই চলে যাচ্ছে। এর পরিচালনায় হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ চাপ তার পক্ষে সামাল দিয়ে ওঠা সহজ নয়। ফলে তিনি ফেসবুক পরিচালনায় যুক্তিতর্কের মাধ্যমেই অনীহা প্রকাশ করেছেন।

তার ভাষ্যমতে, ১৫ মার্চ থেকে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা তাদের অ্যাকাউন্টে প্রবেশের সুযোগ আর নাও পেতে পারেন। ফেসবুক বন্ধ হওয়াটা নিঃসন্দেহে কষ্টদায়ক, মর্মাহত। তারপরও হয়তো নেতিবাচক সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত ঘোষণা আকারে আসতে পারে বলে তিনি ইঙ্গিত করেন।  অতিগোপনীয় ব্যক্তিগত ফোনভিত্তিক আলোচনায় তিনি জানান, ফেসবুক বন্ধ। এটা কোনো বড় বিষয় নয়। আমার বিশ্বাস এটি বন্ধ হলেও বন্ধুত্বের বন্ধন বিচ্ছিন্ন হবে না।

এ প্রসঙ্গে ফেসবুকের কারিগরি বিভাগের সহসভাপতি আভরাট হামরাতি জানান, স্থায়ীভাবে ১৫ মার্চ থেকে ফেসবুক বন্ধের ঘোসণা আসতে পারে। এর আগে ব্যবহারকারীরা তাদের ছবি দেখতে এবং সংগ্রহ করার সুযোগ পাবেন। উল্লেখ্য, তবে ফেসবুক বন্ধ হয়ে গেলে এ সুযোগ আর পাওয়া যাবে না। ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ফেসবুক পরিচালনায় জুকারবার্গকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিলে তিনি তা তাৎক্ষণিক নাকচ করে দেন। জুকারবার্গ জানান, আর্থিক বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ নয়। এ প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় জীবন জটিল হয়ে উঠেছে। তাই তিনি সাধারণ জীবনে ফিরে যেতে চান।

তবে ফেসবুক বন্ধের সংবাদে অভিভাবকদের মনে বইছে প্রশান্তির সুবাতাস। তাদের মতে, ফেসবুকের কারণে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখায় নিয়মিদ ফাঁকি দিতে শুরু করেছে। বন্ধের পর শিক্ষার্থীরা ফেসবুক নেশা থেকে মুক্তি পাবে। এদিকে একটি সংবাদমাধ্যম সূত্র জানিয়েছে, ফেসবুক করপোরেশন ১৫ মার্চের আগেই ব্যবহারকারীদের নিজ নিজ অ্যাকাউন্ট থেকে সব তথ্য, ছবি এবং ভিডিওচিত্র মুছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে যাত্রা শুরু করে ফেসবুক। এ মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগের এ সাইটটির ব্যবহারকারির সংখ্যা ৫০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। তবে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের সূত্রগুলো জানিয়েছে, ফেসবুক কখনই বন্ধ হবে না। এ সাইটের মানোন্নয়নের কারণে সাময়িকভাবে ব্যবহারকারীরা প্রতিবন্ধকতার মুখে হতে পারেন।

সব মিলিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, জুকারবার্গ তার পুরনো সহজ সরল জীবনে ফিরে যেতে চান। এ ইচ্ছাকেই পুঁজি করে অনেক সংবাদমাধ্যম ফেসবুক বন্ধ নিয়ে নানা ধরনের তথ্যপ্রকাশ করছে।

সূত্র: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম