হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নে গতকাল মঙ্গলবার দুই গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২০ জনকে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এলাকাবাসী জানায়, সিএনজিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় এক নারী-পথচারী আহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ হয়। দুই পক্ষই মাইকে ঘোষণা দিয়ে গ্রামবাসীকে জড়ো করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে ধর্মঘর ইউনিয়নের আহম্মদপুর এলাকায় সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা পথচারী এক নারীকে ধাক্কা দিয়ে পালানোর সময় সোয়াবই গ্রামের তিন যুবক অটোরিকশা ও চালককে আটক করে হরষপুর রেলস্টেশনে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় অটোরিকশা স্টেশনের লাইনম্যান চকরাজেন্দ্রপুর গ্রামের আবদুর রহমান ও তাঁর লোকজন ওই তিন যুবককে মারধর করে। এ খবর সোয়াবই গ্রামে পৌঁছালে গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার জের ধরে গতকাল সোয়াবই ও চকরাজেন্দ্রপুর গ্রামের লোকজন মাইকে ঘোষণা দিয়ে নিজ নিজ গ্রামের কয়েক শ বাসিন্দাকে জড়ো করে। দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হরষপুর রেলস্টেশন এলাকায় জড়ো হলে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় এক ঘণ্টার সংঘর্ষে দুই পক্ষে কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ধর্মঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সামসুল ইসলাম বলেন, গত সোমবার একটি অটোরিকশা এক নারীকে ধাক্কা দেয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকালের সংঘর্ষ হয়।
মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ কবিরুল ইসলাম বলেন, বড় ধরনের সংঘর্ষ এড়াতে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে গতকাল দুপুরে আদালতের মাধ্যমে হবিগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। থানায় বিকেল পর্যন্ত কেউ মামলা করতে আসেনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ব্যক্তিরা হলেন মইদর আলী, আবদুল মালেক, শফিকুল ইসলাম, মুখলেছুর রহমান, খোকন মিয়া, আরিফ মিয়া, সুমন মিয়া, রাজা মিয়া, আবদুস সালাম, আবদুল আলিম, সুলতান মিয়া, কবির মিয়া, তাজু মিয়া, ফরিদ মিয়া, ঝণ্টু মিয়া, ফরিদ মিয়া, খলিল মিয়া, আউয়াল মিয়া, বাবুল মিয়া ও কামাল মিয়া।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন সোয়াবই গ্রামের ইউপি সদস্য আবদুর রহিম এবং ওই গ্রামের বাসিন্দা মো. হারুন মিয়া ও ইসতিয়াক মাহমুদ, চকরাজেন্দ্রপুর গ্রামের ইউপি সদস্য দুধ মিয়া এবং ওই গ্রামের জয়নাল আবেদিন, একই ইউনিয়নের নিদারাবাদ গ্রামের মো. আয়ুব আলী, সুলতানপুর গ্রামের আবু তাহের, দুর্গাপুর গ্রামের মো. উসমান মিয়া, মনতলা শাহজালাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মো. আল আমিন ও বঙ্গবীর উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র মো. উবায়দুল হক আরিফ।