ডাহুক জলের পাখি। খুব ভীরু। জলাভূমির আশেপাশের ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে থাকা এই পাখিটি মাঝারি সাইজের।লাজুক স্বভাবের-মানুষের সাড়া পেলেই লুকিয়ে পড়ে।লেজ ছোট।পা লম্বা। পায়ের আঙুলও বেশ লম্বা। পিঠের রঙ ধূসর (ফ্যাকাশে কালো) থেকে খয়েরী-কালো, মাথা ও বুক সাদা। লেজের নীচের অংশে লালচে আভা। ঠোট হলুদ রঙের, ঠোটের উপরে লাল রঙের একটি ছোট্ট দাগ আছে। ডাহুক খুব সুন্দর একটি পাখি। জল এদের প্রধান আশ্রয়। পুকুর, খাল, জলাভূমি, বিল, নদীর গোপন লুকানো জায়গা এদের খুব প্রিয়।

ডাহুক অনেক সময় পোষও মানে। এই অনুগত পোষা পাখিটি দিয়ে অনেকে বুনো ডাহুকও শিকার করে।মাটিতে, ঝোপের তলায় এরা বাসা তৈরি করে। আষাঢ়- শ্রাবন মাস এদের প্রজননকাল। জলাশয়ের ধারে ঝোপের মধ্যে এরা বাসা বানায়। ৬-৭টি ডিম পাড়ে। ডিমের রঙ ফিকে হলুদ বা গোলাপি মেশানো সাদা। স্বামী স্ত্রী মিলে ডিম তা দেয়। তবে অদ্ভুত ব্যাপার হল এ পাখির বাচ্চাগুলো কালো রঙের। পোকামাকড়, শামুক, উদ্ভিদের ডগা, শস্যদানা এদের প্রিয় খাবার। তবে বাচ্চার খাবার গ্রহণের সময় ঘটে সবচেয়ে মজার ঘটনা। অন্য বেশিরভাগ পাখিরা তাদের বাচ্চাকে মুখে তুলে খাইয়ে দেয়। কিন্তু মা ডাহুকী কখনও বাচ্চাদের তুলে খাওয়ায় না। রাতে ডাহুকের ‘কোয়াক’ ‘কোয়াক’ ডাক শুনে সহজেই একে চিনতে পারা যায়। এই ডাক পুরুষ পাখির,যা বর্ষাকালে বেশি শোনা যায়।একটানা অনেকক্ষণ ডেকে শ্বাস নেয়। ডাহুক এর স্ত্রী প্রতিশব্দ ডাহুকি। ডাহুক বাংলাদেশের একটি বিপন্ন পাখি। একে এখন অতটা আর দেখা যায়না।

 

তাহলে কীভাবে খায় ওরা? ডিম থেকে বাচ্চা বের হবার সাথে সাথে প্রাকৃতিক নিয়মেই বাচ্চাগুলো ২০ ফিট উঁচু থেকে লাফ দিয়ে নামে মাটিতে। শরীরটা পাতলা বলে লাফ দিয়ে মাটিতে পড়লেও তাদের কিছুই হয় না। মাটিতে নেমেই বাচ্চাগুলো মা বাবার পিছনে পিছনে হেঁটে হেঁটে খাবার খুঁটে খুঁটে খায়।