কিশোরগঞ্জ শহরের বত্রিশ এলাকায় পরিবহন ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবি, তাঁকে হত্যার হুমকি এবং টাকা না পেয়ে ভাইকে পেট্রল দিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা ঘটনার রহস্য বেরিয়ে এসেছে। এসব ঘটনার নেপথ্যে ছিলেন ব্যবসায়ী হাবিবেরই ছোট ভাই ইব্রাহিম খলিলপুলিশ ইব্রাহিম ও তাঁর বন্ধু জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানা গেছে। গত সোমবার রাতে মুঠোফোনের একটি কলের সূত্র ধরে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

জানা যায়,কিশোরগঞ্জ সড়ক পরিবহন সমিতির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমানের কাছে গত ১১ জুলাই ‘সর্বহারা বাহিনী’র নামে একটি চিঠি আসে। চিঠি আসার কিছুক্ষণ পর মুঠোফোনে কল করে হাবিবুরের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। অন্যথায় তাঁকে হত্যা এবং তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের অপহরণের হুমকি দেওয়া হয়। এর দুই দিন পর তাঁর ছোট ভাই কলেজছাত্র ইব্রাহিমকে নিজ বাড়িতে পেট্রল দিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয়। পরে তাঁকে হাত-পা বাঁধা ও মুখে স্কচটেপ মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার কোনো উৎস খুঁজে বের করতে না পারায় চাপ আসে পুলিশ প্রশাসনের ওপর। জেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতপক্ষে পুরো ঘটনাটি ছিল সাজানো। গতকাল মঙ্গলবার ইব্রাহিম ও জাহাঙ্গীরকে কিশোরগঞ্জ থানায় সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। এ সময় ইব্রাহিম সাংবাদিকদের কাছে পুরো ঘটনার বর্ণনা দেন।ইব্রাহিম বলেন, তাঁর কিছু টাকা ঋণ ছিল। পরিবারের লোকজন তাঁকে ভালো চোখে দেখত না। এ জন্য কোটিপতি বড় ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে তিনি বগাদিয়া এলাকার জাহাঙ্গীরের সঙ্গে পরামর্শ করে এ ঘটনা ঘটান।

জাহাঙ্গীর বলেন, ইব্রাহিমের কথামতো তিনি রশি দিয়ে তাঁর হাত-পা বেঁধে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে চলে যান। পরে তিনি হাবিবের কাছে ফোন করে বলেন, ‘বাসায় গিয়ে দেখ, তোর ভাইকে বাঁচাতে চাইলে অবশ্যই চাঁদার টাকা দিতে হবে।’

এ সময় কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা ও সার্কেল এএসপি মো. জসিম উদ্দিন ছাড়াও কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন, জেলা সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি শাহজাহান লস্কর, ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমানসহ তাঁর আত্মীয়রা উপস্থিত ছিলেন।কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, ইব্রাহিম ও জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

-Prothom alo