পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট মুজিব হত্যাকাণ্ডের প্রথম প্রতিবাদ হয়েছিল কিশোরগঞ্জে। সাড়া দেশে ওই দিন ভোরে নেমে আসে ভয়াবহ শোকার্ত পাষাণ নীরবতা। এ নীরবতা ভেঙ্গে রাজপথ প্রকম্পিত করেছিল কিশোরগঞ্জের সাহসী সৈনিকেরা। শহরের স্টেশন রোড গৌরাঙ্গ বাজার এলাকায় ছাত্র ইউনিয়ন কার্যালয় থেকে ওরা ক’জন ছাত্র-যুবা মিছিল করে প্রতিবাদ করেছিল। মিছিলের শ্লোগান ছিল ‘মুজিব হত্যার পরিণাম-বাংলা হবে ভিয়েৎনাম’, ‘মুজিব হত্যার বদলা নেবো বাংলাদেশের মাটিতে’, ‘এক মুজিবের রক্ত থেকে লক্ষ মুজিব জন্ম নিবে’, ‘ডালিমের ঘোষণা মানি না-মানবো না’। এ মিছিল সাড়া শহরকে আন্দোলিত করে। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফের ছাত্র ইউনিয়ন কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।

পরে পুলিশি ধাওয়ায় ছাত্র-জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। সেদিনের এ প্রথম ঐতিহাসিক প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেয়া অকুতভয় কীর্তিমান যুবকেরা হচ্ছেন বর্তমান আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের ঢাকা বার শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. সাইদুর রহমান মানিক, জেলা গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট ভুপেন্দ্র চন্দ্র, দোলন ভৌমিক, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির প্রয়াত সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আমিরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিক উদ্দিন আহমেদ পনির, খালিয়াজুড়ি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ তদানীন্তন কমিউনিস্ট পার্টির সংগঠক গোলাম হায়দার চৌধুরী, সাবেক বীমা কর্মকর্তা মরহুম সেকান্দার আলী ভুঁইয়া, জেলা গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান মুক্তু, অলক ভৌমিক, শ্রমিক নেতা আকবর হোসেন খান, বিশিষ্ট আইনজীবী অশোক সরকার, অধ্যক্ষ হালিম দাদ খান রেজুয়ান, নুরুল হোসেন সবুজ, সিপিবির সাবেক সভাপতি মো. এনামুল হক ইদ্রিছ, আওয়ামী লীগ নেতা পীযূষ কানি- সরকার, তরুণ কুমার রাউত, নির্মল চক্রবর্তী, আইনজীবী ও সাংবাদিক আলী আসগর স্বপন, প্রয়াত সৈয়দ লিয়াকত আলী বুলবুল এবং তদানীন্তন ছাত্র ইউনিয়ন অফিস সংলগ্ন চা ক্যান্টিনের মালিক মরহুম আবদুল আহাদ।

মাজহার মান্না, কিশোরগঞ্জ