নাগবল্লী বাংলাদেশ ও ভারতের প্রজাতি হলেও স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণের প্রজাতির আদি আবাস আফ্রিকা। আলংকারিক গুল্ম হিসেবে আমাদের দেশে আমদানি। আগে খুব একটা দেখা যেত না। দীর্ঘদিন বিভিন্ন পার্ক, উদ্যান ও পথপাশে রূপান্তরিত পাতার সিঁদুরে লাল ও সাদা রঙের নাগবল্লী দেখেই সন্তুষ্ট থেকেছি। সম্প্রতি আরেকটি ফুল দেখে ধাঁধায় পড়ি। দেখতে অবিকল নাগবল্লীর মতো না হলেও আগার পাতাটি সাদা রঙে রূপান্তরিত।

রাঙামাটির পাহাড়ে বুনো ঝোপঝাড়ের ভেতর রূপান্তরিত পত্রের এক জাতের গুল্ম চোখে পড়ে। সবুজের পরিবর্তে হঠাৎ সাদা রঙের দু-এক গুচ্ছ পত্রভরা ডালপালা। প্রথমে ভেবেছিলাম সম্ভবত সেই গাছটিই হতে পারে। পরে ভুল ভাঙে। বইপুস্তক ঘেঁটে দেখি এটিও নাগবল্লী। তবে খুব একটা দেখা যায় না। প্রচলিত ইংরেজি নাম Dwarf Mussaenda, White wing ইত্যাদি। ঢাকায় রমনা পার্ক নার্সারিতে দাঁতরাঙার পাশে একটি গাছ আছে। অন্যত্রও বিক্ষিপ্তভাবে আছে দু-একটি। সব মিলিয়ে আমাদের দেশে তিন প্রজাতির কয়েক ধরনের নাগবল্লী দেখা যায়। আলোচ্য Mussaenda lutea প্রজাতি ঝোপাল ছোট আকৃতির চিরসবুজ গাছ।

সাধারণত দুই থেকে তিন ফুট উঁচু হতে পারে। পাতার রং উজ্জ্বল সবুজ, প্রায় চার সেন্টিমিটার লম্বা, হলুদ রঙের ফুল। সৌন্দর্য ও সঠিক প্রস্ফুটনের জন্য বছরে অন্তত একবার ডালপালা ছেঁটে দেওয়া প্রয়োজন। এটিও ক্রান্তীয় আফ্রিকার গাছ। তবে কোনো কোনো গ্রন্থে এশিয়ার কথাও বলা হয়েছে। এ গাছ বর্ণবৈচিত্র্য তৈরিতে আদর্শ বাগানের জন্য উত্তম। রোদ বা আংশিক ছায়া পছন্দ। মৌমাছি, প্রজাপতি এবং কিছু কিছু পাখির পছন্দের গাছ। বংশবৃদ্ধি কলমে।

-মোকারম হোসেন