সবজি উত্‍পাদনের জন্য এক সময় বাজিতপুরের যথেষ্ট সুনাম ছিল৷ গত কয়েক বছর ধরে বাজিতপুরের কলাবাগানের উত্‍পাদিত কলার সুখ্যাতিও চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে৷ ফলে প্রতি বছরই আবাদের জমির পরিমাণ ও চাষীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে৷ কৃষি বিভাগের হিসাব মতে, বাজিতপুরে চলতি মৌসুমে কলার আবাদ হয়েছে ৮০ হেক্টর জমিতে এবং কলা চাষীর বর্তমান সংখ্যা ৪৫০ জন৷ উপজেলার পশ্চিম পিরিজপুর, দক্ষিণ পিরিজপুর, গজারিয়া, উজানচর, সুলতানপুর প্রভৃতি গ্রামে সহস্রাধিক কলার বাগান রয়েছে৷ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে অত্রাঞ্চলে সাধারণত সাগর কলার চাষই বেশি হয়৷

তাছাড়া শর্বরী, চিনিচম্পা, নিহাইল্যা, আইট্টা, খড়া, বুইত্যা প্রভৃতি দেশি জাতের কলার আবাদতো রয়েছেই৷ মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিরাট কলার হাট বসে৷ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে ট্রাক, নৌকা, টমটম ইত্যাদি ভর্তি করে কলা নিয়ে যায়৷ অনেকে কলার বাগানে ছড়ি দেখে কাঁচা অবস্থায়ই অগ্রিম পুরো কলার বাগান কিনে নেয়৷ দক্ষিণ পিরিজপুরের সফল কলা চাষী আঃ মমিন জানায় , বর্তমানে তার তিনটি বাগানে ১১০০ কলার গাছ রয়েছে৷ একটি বাগানের ৪০০ কলার ছড়ি কাঁচা অবস্থায়ই এক লক্ষ টাকা দাম হয়েছে৷ একই গ্রামের কলার চাষী মারফত আলী জানায়, তিনি ২৫ শতাংশ জমিতে ৩০০ কলার চারা রোপণ করেছিলেন৷ মাত্র এক বছর পর কলা বিক্রি করে খরচ বাদে তার ৬০/৭০ হাজার টাকা লাভ হবে৷

পিরিজপুর বাজারে আলাপ হয় কলার পাইকার মোঃ সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে৷ তিনি ট্রাক ভর্তি করে বিক্রির জন্য কলা নিয়ে যাচ্ছেন বি-বাড়িয়া জেলায়৷ তাছাড়া স্থানীয় পাইকাররা টমটম, রিকশা, ভ্যানগাড়ি করে কলা নিয়ে বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারে দোকানীদের নিকট বিক্রি করে থাকে৷ বহিরাগত পাইকাররা জানায়, এখান থেকে রাজধানী ছাড়াও সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, বি-বাড়িয়া, কুমিল্লা, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম প্রভৃতি জেলায় প্রচুর কলা রপ্তানি হয়৷ কলা চাষের জন্য খুব একটা যত্ন-আত্তির প্রয়োজন হয় না৷ তবে ঝড়-তুফান আসলেই কলা চাষীদের ভয়৷ ঝড়ে কলা বাগানের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়৷ কলা চাষীরা জানায়, কলা চাষের জন্য পর্যাপ্ত ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করলে অত্র এলাকায় কলা চাষ আরো সম্প্রসারিত হবে৷