আসামে বিস্ফোরণে গতকাল লাইনচ্যুত রেল-বগি এএফপি

আটচলি্লশ ঘণ্টার বন্ধ চলাকালে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মাওবাদী বিদ্রোহীদের হামলায় পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ সাতজন নিহত হয়েছে। উড়িষ্যা, ছত্তিশগড় এবং ঝাড়খণ্ডের রেলওয়ে স্টেশন, পুলিশ স্টেশন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানকে লক্ষ্য করে মাওবাদীরা এই হামলা চালিয়েছে। পুলিশ গতকাল জানায়, মাওবাদী মুখপাত্র চিরুকোরি রাজকুমার ওরফে আজাদ হত্যার প্রতিবাদে নিষিদ্ধ ঘোষিত মাওবাদী দলের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার বন্ধ চলাকালে ওই দলের কর্মীরা এ হামলা চালায়। বুধবার শুরু হওয়া এই বন্ধ বৃহস্পতিবার শেষ হয়। এদিকে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট অব বোরোল্যান্ড (এনডিএফবি) বিদ্রোহীরা বৃহস্পতিবার আসামের ককরাজহর জেলার রেললাইনে বিস্ফোরণ ঘটালে কলকাতাগামী গরিবরন এক্সপ্রেসের পাঁচটি বগি ও ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়। এতে এক শিশু নিহত ও ১৩ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে দু’জন নিরাপত্তা কর্মী। খবর বিবিসি ও হিন্দুস্তান টাইমস অনলাইনের।
পুলিশ বলছে, ছত্তিশগড়ের গোলযোগপূর্ণ দান্তেওয়াদা জেলার কাউনকান্দা এলাকায় বিদ্রোহীরা বিস্ফোরণ ঘটালে দু’জন পুলিশ নিহত হয়। একই জেলায় বৃহস্পতিবার মাওবাদী গেরিলারা একজন স্থানীয় কংগ্রেস নেতার বাড়িতে হামলা চালালে দু’জন পুলিশসহ চারজন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে তার পরিবারের একজন সদস্য ও একজন সহযোগী। হামলায় ওই রাজনীতিবিদের ছেলে ও একজন সহযোগী আহত হয়েছে বলে পুলিশ জানায়। দান্তেওয়াদা পুলিশ প্রধান এসকে কালোরি বলছেন, এই হামলাকালে পুলিশ পাল্টা গুলি ছুড়লে ছয়জন বিদ্রোহী নিহত হয়।
ছত্তিশগড়ে বিদ্রোহীরা আধাসামরিক বাহিনীর ক্যাম্পে হামলা চালিয়েছে। উড়িষ্যার প্রতিবেশী খেজহার জেলায় পুলিশ স্টেশনে ৫০ মাওবাদী আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ঝাড়খণ্ড রাজ্যের ধানবাদের নিশিতপুর এলাকায় বিদ্রোহী ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে একজন পুলিশ নিহত হয়। মাওবাদীরা ধানবাদ এবং ঝাড়খণ্ডের লাতেহার এলাকায় রেলওয়ে লাইনে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দিলে ওই এলাকার ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়।
ছত্তিশগড়ের রাজধানী রায়পুর থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জানান, ঝাড়খণ্ড ও ছত্তিশগড়ের অনেক গ্রামের জনজীবন অচল হয়ে পড়ে।
এসব গ্রামে ট্রেন চলাচল স্থগিত রয়েছে এবং বন্ধের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে।

গত সপ্তাহে অল্প্রব্দ প্রদেশের মাওবাদীদের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা আজাদ নিহত হওয়ার প্রতিবাদে বন্ধ চলাকালে এই সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
নিরাপত্তা বাহিনী বলছে, বন্দুকযুদ্ধে আজাদ নিহত হয়েছে। তবে পুলিশের এনকাউন্টারে তিনি নিহত হয়েছেন বলে বিদ্রোহীরা দাবি করছে।