কিশোরগঞ্জ জেলা শহর থেকে ৫ কিলোমিটার পূর্বে করিমগঞ্জ উপজেলার কাদিরজঙ্গল ইউনিয়নের নরসুন্দা নদীর তীরে জঙ্গলবাড়ি দুর্গের অবস্থান। কিশোরগঞ্জ শহর থেকে বাস অথবা বেবী যোগে সরাসরি ঈশা খাঁ দূর্গে আসা যায়। এক সময় দুর্গম জঙ্গলাকীর্ণ ছিল বলেই হয়তো এর নাম হয়েছে জঙ্গলবাড়ি। বার ভূঁইয়াদের শ্রেষ্ঠ বীর ঈশাখাঁর রাজধানী হিসেবে জঙ্গলবাড়ির নাম মিশে আছে ইতিহাসে। এখানে রয়েছে প্রায় ভগ্ন দুর্গপ্রাচীর, ধ্বংসপ্রাপ্ত ঈশাখাঁর দরবার হল, প্রাচীন মসজিদ, সামনে ধ্বংসপ্রাপ্ত সান বাধানো ঘাটের বিশাল পুকুর ও প্রায় মাটি চাপা পড়া একটি ভবনের ভিত্তি ভূমি। ইতিহাস বলছে, ষোড়শ শতকের মাঝামাঝি সময় মোগলদের কাছে পরাজিত হয়ে ঈশাখাঁর জঙ্গলবাড়িতে কোচ রাজা লণ হাজোর দুর্গে হামলা করে এটি দখল করে নেন। জঙ্গলবাড়িতে স্থাপন করেন তার দ্বিতীয় রাজধানী। দুর্গটি সংস্কার করে তিনি এর তিন দিকে পরিখা খনন করে নরসুন্দা নদীর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে জঙ্গলবাড়িকে একটি গোলাকার দ্বীপের মত করে গড়ে তোলেন। ১৫৮১ থেকে ঈশাখাঁ জঙ্গলবাড়িতে অবস্থান করে শাসন করেন তার ২২টি পরগনা। জঙ্গলবাড়ি অবস্থান করেই তিনি সোনারগাঁও দখল করে সেখানে স্থাপন করেন নতুন রাজধানী। আর তখন থেকেই জৌলুস হারাতে থাকে জঙ্গলবাড়ি।