ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের চরচারতলা এলাকার মেঘনা নদীর তীর অবশেষে দখলমুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। নিউ এশিয়া সিনথেটিক লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি পলিয়েস্টার কারখানা নির্মাণের জন্য নদীসহ প্রায় নয় একর জায়গা ভরাট করেছিল। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে ওই প্রতিষ্ঠানের লোকজন নদী দখলমুক্ত করার কাজ শুরু করেন।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে আশুগঞ্জের চরচারতলা গ্রামের নদী ভরাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাটি সরিয়ে নিতে এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ভরাট এলাকায় আনা হয়েছে এবং মাটি সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিষ্ঠানের নির্দেশে আজ (শুক্রবার) থেকে মাটি সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। নদী এলাকা থেকে মাটি সরিয়ে নেওয়ার কাজ শেষ করতে বেশ কিছু দিন সময় লাগবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘প্রথম আলোয় সচিত্র প্রতিবেদনটি পড়ার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং আইনানুগভাবে উচ্ছেদের নির্দেশ দেন। এর পর থেকে জেলা প্রশাসন নদী দখলমুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করে।’ গত ১২ মে ‘দখলের কবলে মেঘনা’ শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই দিনই প্রধানমন্ত্রী ৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করতে আশুগঞ্জে আসেন। তিনি নদী দখলের খবর জানতে পেয়ে ওই দিনই জেলার কর্মকর্তাদের নদীটি দখলমুক্ত করার নির্দেশ দেন। এরপর জেলা প্রশাসন সরেজমিনে ভূমি পরিমাপ করে আট একর ৩৯ শতাংশ নদী ভরাট হয়েছে বলে প্রমাণ পায়।
ওই ঘটনার পর আশুগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনিরা বেগম জেলা প্রশাসনের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটিকে সাত দিনের মধ্যে মাটি সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেন। নির্দেশ পাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি তিন মাসের সময় চেয়ে নেয়। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন এক মাসের সময় দেয়। ২৭ জুলাই ওই সময়সীমার শেষ দিন। তবে তার আগেই গতকাল থেকে মাটি সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।

প্রথম আলো – ২৪/৭/২০১০