সংকট এড়াতে রাজস্ব হার না বাড়িয়ে রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি এবং অপ্রয়োজনীয় ও অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া।

সোমবার বিকালে তার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনকালে তিনি সরকারকে এই পরামর্শ দেন।

খালেদা জিয়া বলেন, “আমরা মনে করি, ভয়াবহ সংকট এড়াতে রাজস্ব হার বৃদ্ধি না করে রাজস্ব সংগ্রহের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে। সরকারের অপ্রয়োজনীয় ও অনুৎপাদনশীল ব্যয় কমাতে হবে।”

তিনি অস্বচ্ছ পন্থায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির চেষ্টা পরিহার করে আশুগঞ্জ ও এলেঙ্গায় ক�েপ্রসার বসিয়ে গ্যাস ও বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর পরামর্শ দেন।

সোমবার হোটেল শেরাটনের উইন্টার গার্ডেনে প্রায় দুই ঘন্ট ধরে বিএনপি চেয়ারপারসন তার এই বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। বিকাল ৪টা ৩৫ মিনিটে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টা ২৮ মিনিটে তার বক্তব্য শেষ হয়।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনার শুরুতেই সরকারি বরাদ্দের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার হিসেবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ভৌত অবকাঠামো খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার দাবি জানান।

দুই ঘন্টার লিখিত বক্তব্যে খালেদা বার্ধক্য পেনশন ফান্ড, স্বাস্থ্য বীমা, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমাতে প্রণোদনা ও বস্তুগত সহায়তা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় পদক্ষেপ গ্রহণ, আবাসন ব্যাংক স্থাপন করে আগামী অর্থ বছরে আড়াইশ’ কোটি টাকার নতুন তহবিল গঠন, কৃষি বীমা, সারের ওপর ভর্তুকি বৃদ্ধি, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ নানা প্রস্তাব রাখেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন তথ্য প্রযুক্তি খাতে নতুন কর ধার্য না করার অনুরোধ জানান।

করের হার না বাড়ানোর পাশাপাশি বিদ্যমান মুদ্রাস্ফীতির কথা চিন্তা করে তিনি আয়করের ক্ষেত্রে আয়সীমা ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা নির্ধারণেরও প্রস্তাব করেন।

তিনি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরার পাশাপাশি বর্তমান সরকারে ১৬ মাসের ব্যর্থতার চিত্র তুলে ধরেন।

বার্ধক্য পেনশন ফান্ড গঠনের জন্য আসন্ন বাজেটে ১শ’ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন খালেদা জিয়া।

এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ”দেশে গড় আয়ু বাড়ছে। বার্ধক্যে কোনো রকম আয়-রোজগারের সুযোগ না থাকায় আমরা একটি পেনশন ফান্ড গঠনের প্রস্তাব রাখছি। এই ফান্ড প্রবীণদের কল্যাণে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে পরিচালিত হবে। পেনশন ফান্ড সঞ্চয় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক হবে। যারা পেনশন পায় না অথচ আয় করে তারা সবাই পর্যায়ক্রমে এই পেনশন ফান্ডের অন্তর্ভুক্ত হবে।”

জাতীয় পরিচয় পত্র থাকায় এই ফান্ডের ব্যবস্থাপনা সহজ হবে বলেও মনে করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।