ভৈরব পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি শরফাত আলীর ছেলে এমদাদুল হক রুবেল মঙ্গলবার সকালে রেলওয়ের আনসার মহিবুল্লাহকে পিটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রেলওয়ে পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিলে ওই আওয়ামী লীগ নেতা মহিবুল্লাহ কিভাবে ভৈরবে চাকরি করে তা দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন। আহত আনসার মামলা করেছেন।
ভৈরব রেলওয়ে থানার ওসি বিল্লাল হোসেন জানান, আনসার সদস্য মহিবুল্লাহ সকালে নাস্তা কিনতে রেলওয়ে স্টেশনের পাশে রাজমণি হোটেলে যায়। ফেরার পথে রুবেল আগের এক ঘটনার জের ধরে মহিবুল্লাহকে থামিয়ে গালিগালাজ শুরু করে। একপর্যায়ে রুবেল মান্দার গাছের কাঁটাযুক্ত ডাল দিয়ে পিটিয়ে তাঁকে রক্তাক্ত করে। তাঁর আর্তচিৎকার শুনে স্টেশনে কর্মরত অন্য আনসার ও জিআরপি পুলিশ সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে। এ সময় অভিযুক্তকেও আটক করে থানায় আনা হয়। দুপুর ১২টার দিকে রুবেলের বাবা মো. শরফাত আলী ছেলেকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় আসেন। তিনি নিজেকে ভৈরব পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি দাবি করে ছেলেকে ছেড়ে দিতে বলেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানানো হলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে তিনি বলেন, কী করে আনসার সদস্য মহিবুল্লাহ ভৈরবে চাকরি করে তা দেখে নেওয়া হবে। এরপর তিনি থানা থেকে বেরিয়ে যান।
মহিবুল্লাহ জানান, গত ১ মাস আগের এক রাতে তিনি রেলওয়ে থানার গেট পাহারায় ছিলেন। ভোর ৪টার দিকে মদ্যপ অবস্থায় রুবেল থানার গেটে আসেন। সেখানে আসার কারণ জানতে চাইলে রুবেল ক্ষেপে গিয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায়, রাত যতই হোক আর যেখানেই হোক আমাদের কোনো জবাবদিহি করতে হয় না।’ ওই সময় তাকে আটক করতে গেলে দৌড়ে দূরে চলে গিয়ে পরে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। মহিবুল্লাহ বলেন, ‘ওই ঘটনার জের ধরেই আমার ওপর হামলা হয়েছে।’
থানায় গিয়ে হুমকি দেওয়ার কথা অস্বীকার করে শরফাত আলী বলেন, ‘রেলওয়ে থানার ওই আনসার সদস্যসহ আরো অনেক জিআরপি সদস্য অবৈধ ফেনসিডিল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কয়েক দিন আগে জিআরপি থানার কিছু সদস্যদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিভাগে লিখিত অভিযোগ করেছি। এ কারণে তারা আমার ওপর ক্ষেপে আছে। মূলত এ কারণে জিআরপির কয়েকজন সদস্য মিলে সাদা পোশাকে আমার ছেলেকে মারধর করে থানায় ধরে নিয়ে যায়। আত্দরক্ষার চেষ্টা করতে গিয়ে সেও তাদের মারধর করেছে।’ বিকেলে রুবেলকে রেলওয়ে থানা থেকে বেঙ্গল থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।