সাংবাদিক, শিশুসাহিত্যিক ও কৃষিবিদ আরিফ হাসান আর নেই। ১৪ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে রাজধানীর ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইনত্দেকাল করেন। ইন্না লিলস্নাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার বয়স হয়েছিল ৩৫ বছর। তিনি দীর্ঘ দিন থেকে হার্টের ভাল্ব সমস্যায় ভুগছিলেন। কয়েক মাস আগে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে অপারেশনের পর তিনি অনেকটা সুস্থ হয়ে ওঠেন। পরে তার শারীরিক পরিস্থিতির আবার অবনতি হতে থাকে। তার স্ত্রী জানিয়েছেন, তার হার্ট রক্ত পাম্প করতে পারছিল না। ফলে গত ১০ সেপ্টেম্বর আবারো তাকে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে ভর্তি করা হয়। অবস্থার মারাত্মক অবনতি হলে লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সব চেষ্টা মস্নান করে শুক্রবার রাতে তিনি পৃথিবী ছেড়ে চলে যান।

মৃত্যুএ পর শুক্রবার রাতেই তার লাশ গ্রামের বাড়ি মাগুরায় নেয়া হয়েছে। গতকাল বাদ জোহর সেখানে জানাজার নামাজ শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আরিফ হাসান দৈনিক নয়া দিগনত্দের সিনিয়র সহসম্পাদক ছিলেন। নয়া দিগনত্দের চাষাবাদ ও আগডুম বাগডুম পাতার তিনি ছিলেন বিভাগীয় সম্পাদক। তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় সব দৈনিক ছাড়াও শিশুবিষয়ক বিভিন্ন মাসিক, সাপ্তাহিক ও অনলাইন পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করতেন। ছড়া, গল্প, ফিচার, প্রাণিসম্পদ ও গবেষণাধর্মী বিভিন্ন লেখা ও সম্পাদনা মিলিয়ে তার প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ২৬।

তার পড়ালেখা মাটি ও মানুষ, অর্থাৎ কৃষি নিয়ে হলেও যুক্ত ছিলেন বহুমাতৃক লেখালেখির সাথে। তিনি শেরেবাংলা কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রজীবন থেকেই সাংবাদিকতার সাথে জড়িত ছিলেন। দৈনিক প্রথম আলোর শুরুর দিকের প্রদায়ক হিসেবে সাংবাদিকতায় তার হাতেখড়ি। ২০০৪ সালে নয়া দিগনত্দের শুরম্ন থেকেই তিনি এ পত্রিকায় ফিচার বিভাগে যোগ দেন। নয়া দিগনত্দের ছোটদের পাতা আগডুম বাগডুম এবং কৃষিবিষয়ক পাতা চাষাবাদ সম্পাদনা করতেন। এর আগে তিনি ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসেবে প্রথম আলো, যুগানত্দর, জনকণ্ঠ, কিশোর তারকালোকসহ বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করেন। লেখালেখি ছাড়াও আরিফ হাসান বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি তার গ্রামের বাড়ি মাগুরার গোপালপুরে ‘আমাদের পাঠাগার’ নামে একটি সমৃদ্ধ পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি হিসেবে তিনি ছিলেন ইশকুল নামে একটি ত্রৈমাসিক সঙ্কলনের সম্পাদক।
মৃতু্যকালে তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

১৯৭৭ সালের ৭ অক্টোবর মাগুরা জেলার গোপালপুরে তার জন্ম হয়। বাবা গোলাম মোহাম্মদ বিশ্বাস ও মা সুফিয়া মোহাম্মদ। তিনি রাজধানীর বাসাবোর ১০৭ নম্বর বাসায় থাকতেন।

লিখেছেনঃ শাহ মুহাম্মদ মোশাহিদ
সাব এডিটর,  দৈনিক নয়া দিগন্ত