সম্প্রতি অ্যাপলের আইপ্যাড সদৃশ সবচে কমদামের ট্যাবলেট কম্পিউটার তৈরির ঘোষণা দিয়েছে ভারত। এই ট্যাবলেটে আধুনিক কম্পিউটারের সব ধরনের প্রযুক্তি থাকার ঘোষণা দেয়া হলেও এতো কম দামে সেটি বাজারে ছাড়া সম্ভব কিনা সেটি নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে। খবর উইয়ার্ড অনলাইনের। সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে চলা এই ট্যাবলেটের দাম হতে পারে ৩৫ ডলার বা প্রায় দেড় হাজার রুপি। জানা গেছে, এই ট্যাবলেটের দাম কমে ২০ থেকে ১০ ডলারেও আসতে পারে।

ট্যাবলেটের সঙ্গে ইন্টারনেট ব্রাউজার, মিডিয়া প্লেয়ার, পিডিএফ রিডার ছাড়াও এতে ভিডিও কনফারেন্স করার সুবিধা থাকবে। পাশাপাশি এতে ইন্টারনেটও ব্যবহার করা যাবে। এমনকি সৌরশক্তি ব্যবহার করেও চালানো যাবে এ ট্যাবলেট বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, ভারতের মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী কপিল সিবাল এক সংবাদ সম্মেলনে এই কম্পিউটার তৈরির ঘোষণা দেন। তিনি একটি মডেলও সেখানে তুলে ধরেন।

জানা গেছে, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের গবেষকরা এই ডিভাইসটি তৈরি করবেন। তবে সংবাদমাধ্যমটি সংশয় প্রকাশ করেছে, এই ট্যাবলেটের পাওয়ার প্রসেসিং, মেমোরি এবং স্টোরেজ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। এমনকি এই ডিভাইসটি টাচস্ক্রিন হবে নাকি পেনভিত্তিক হবে সেটিও পরিষ্কার নয়।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ২০১১ সালে বাজারে আনার ঘোষণা দেয়া হলেও সরকারকে এটি তৈরির জন্য সহায়ক প্রতিষ্ঠান খুঁজতে হবে প্রথমেই। যদিও ভারতীয় কর্মকর্তাদের দাবি, অনেকেই এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে এ বিষয়ে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি। সংবাদমাধ্যমটি আরো জানিয়েছে, আইপ্যাড তৈরির পর ট্যাবলেট জগতে এই ধরনের ডিভাইসের আগ্রহ সাম্প্রতিক সময়ে যথেষ্টই বেড়েছে। আর এ জাতীয় কমদামী ট্যাবলেট তৈরির বিষয়ে এগিয়েও এসেছে অনেক প্রতিষ্ঠান। জাতিসংঘ সম্প্রতি ‘ওয়ান ল্যাপটপ পার চাইল্ড প্রজেক্ট’ এর অধীনে ৭৫ ডলারে ল্যাপটপ তৈরির কথা ঘোষণা দিয়েছে । যা আগামী বছরের শেষদিকে পাওয়া যাবে। তবে এ ল্যাপটপ এখনও পাওয়া যায়, যার দাম ২০০ ডলার।

উল্লেখ্য, এই মার্চে চিপ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মারভেল ১০০ ডলারের ল্যাপটপ বাননোর ঘোষণা দিয়েছিলো যাতে ইন্টারনেটসহ নানা আধুনিক সুবিধা থাকবে। মারভেল-এর বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ১০০ ডলার এর কমমূল্যে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ দিয়ে এ ধরনের ডিভাইস তৈরি করা আসলেই বেশ কঠিন। যেখানে, অ্যাপলের কমদামী সংস্করণটির দামই ৫০০ ডলার, আর সে ডিভাইসটিতে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশের দামই ২৩০ ডলার। অন্যদিকে স্রেফ ৬ ইঞ্চির একটি সাদা-কালো স্ক্রিনের কিন্ডল রিডারের দামও ৬০ ডলার।

সংবাদমাধ্যমটি হিসেব করে দেখিয়েছে, ভারতীয় এ ট্যাবলেট কম্পিউটারের যন্ত্রাংশের খরচ পড়বে কম করে হলেও ৪৭ ডলার। সেখানে এই ট্যাবলেটটির বিক্রয়মূল্য ধরা হয়েছে ৩৫ ডলার বা তারও কম। এর আগে এরকম ইলেকট্রনিক পণ্য বিপণনের বিষয়ে সরকারি কোনো অভিজ্ঞতাও ভারত সরকারের নেই।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের টেসিসও দেশি প্রযুক্তি ব্যবহার করে ল্যাপটপ আনার ঘোষণা দিয়েছিলো। দেশে তৈরি কমদামী এই ল্যাপটপের দাম ধরা হয়েছিলো ১২ হাজার টাকা। এ বছরের এপ্রিলেই বাজারে আসার কথা ছিলো টেসিসের ল্যাপটপ।