প্রসব বেদনায় কাতর অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ভর্তি করেননি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসা কর্মকর্তা। সঙ্গে থাকা স্বজনদের শত অনুরোধ উপেক্ষা করে ওই নারীকে ফিরিয়ে দেন তিনি। এমন অভিযোগ তুলে ওই নারী স্বজনেরা বলেন, পরে হাসপাতালের চত্বরেই ছেলেসন্তানের জন্ম দেন তিনি। গত সোমবার রাতে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতাল ও ওই নারীর পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, রাত পৌনে ১১টার দিকে উপজেলার জাফরাবাদ ইউনিয়নের জাফরাবাদ গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন তাঁর স্ত্রী সুমাইয়া বেগমকে (২৫) ওই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এ সময় প্রচণ্ড প্রসববেদনা ছিল সুমাইয়ার। কিন্তু হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসা কর্মকর্তা আল-আমিন সুমাইয়াকে ভর্তি না করে স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। জাহাঙ্গীর হাসপাতালেই তাঁর স্ত্রীর চিকিৎসাসেবা দিতে কাকুতি-মিনতি করেন। কিন্তু চিকিৎসা কর্মকর্তা কিছুতেই রাজি হননি। একপর্যায়ে ওই কমপ্লেক্সের চত্বরেই ছেলেসন্তান প্রসব করেন সুমাইয়া। খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুল হামিদ ঘটনাস্থলে যান। তিনি প্রসূতি ও সদ্যভূমিষ্ঠ শিশুকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে চিকিৎসা কর্মকর্তা ও সেবিকাদের নির্দেশ দেন।

জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, অনেক অনুনয়বিনয় করেও হাসপাতালে স্ত্রীকে ভর্তি করাতে পারেননি। চিকিৎসা কর্মকর্তা আল-আমিন কোনো অবস্থাতেই ভর্তি করাতে রাজি হননি। বরং হাসপাতাল থেকে তিনি তাঁদের বের করে দেন। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দবি করেন তিনি।চিকিৎসা কর্মকর্তা আল-আমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘শেষ মুহূর্তে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরীক্ষা করে রোগীকে স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল না। তাই ঝুঁকি না নিয়ে তাঁকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিই।’ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুল হামিদ বলেন, ‘বিষয়টি অবশ্যই অমানবিক। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ ঘটনায় ওই চিকিৎসা কর্মকর্তা ও সেবিকা শাহনাজ পারভীনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

– সাইফুল হক মোল্লা, কিশোরগঞ্জ