কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলায় দেড় বছর আগে দায়ের করা একটি মামলায় যাঁকে নিহত বলে উল্লেখ করা হয়েছিল, তাঁকে গত বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির নাম আক্কাস আলী (২১)। তিনি দাবি করেন, অপহরণ ও খুন করে লাশ গুম করার মামলায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্যই তাঁর বাবা এত দিন তাঁকে লুকিয়ে রেখেছিলেন। পুলিশ বলেছে, উপজেলার সাকুরাবাজার এলাকা থেকে আক্কাসকে গ্রেপ্তার করে ওই দিনই তাঁকে বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠানো হয়। গতকাল শুক্রবার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার পর তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দেহুন্দা ইউনিয়নের ভাটিয়া মীরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল্লাহ মীর ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে একই গ্রামের বাসিন্দা মঞ্জু মিয়া এবং পার্শ্ববর্তী জেলা ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বাসিন্দা রেনু মিয়া ও চান মিয়ার বিরুদ্ধে আক্কাসকে হত্যা করে তাঁর লাশ গুম করার অভিযোগে আদালতে মামলা করেন। এজাহারে আবদুল্লাহ মীর বলেন, মঞ্জু মিয়া তাঁর ছেলে আক্কাসের সঙ্গে স্বর্ণের ব্যবসা করত। ব্যবসা সূত্রে মঞ্জুর মাধ্যমে নান্দাইলের রেনু মিয়া ও চান মিয়ার সঙ্গে আক্কাসের পরিচয় হয়। বাদীর অভিযোগ, ২০০৯ সালের ৭ অক্টোবর আক্কাসকে মঞ্জু মিয়া বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তাঁকে আর পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে তিনি জানতে পারেন আসামিরা আক্কাসকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও করিমগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সফর আলী জানান, শুরু থেকেই অভিযোগের সত্যতা নিয়ে তাঁদের সন্দেহ হচ্ছিল। একপর্যায়ে তাঁরা জানতে পারেন আক্কাস এখনো জীবিত। গত বৃহস্পতিবার একটি মুঠোফোনের সূত্র ধরে তাঁকে তাঁরা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। মামলার আসামি মঞ্জিল মিয়াসহ অন্যরা জানান, পূর্বশত্রুতার জের ধরে তাঁদের ফাঁসাতে ছেলেকে লুকিয়ে রেখে তাঁদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও খুনের মামলা দায়ের করা হয়। করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমদাদুল হক মিয়া জানান, আক্কাসের বাবা আবদুল্লাহ মীর বর্তমানে পলাতক। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তবে এই প্রতিবেদকের কাছে মুঠোফোনে আবদুল্লাহ মীর দাবি করেন, তাঁর ছেলে আক্কাস ফোন করে তাঁকে (আক্কাসকে) অপহরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি ওই মামলা করেন।