কিশোরগঞ্জে চামড়া ব্যবসায়ীর লুট হওয়া টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত রোববার দিবাগত রাতে শহরের নগুয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন যুবলীগের কর্মী রাসেল (৩২), যুবদলের কর্মী রফিকুল ইসলাম ওরফে সনেট (৩৩) ও তাওহিদুল ইসলাম ওরফে সুজন (৩২)। গতকাল সোমবার তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, শহরের নগুয়া প্রথম মোড়ে অবস্থিত শফিকুল ইসলামের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন চামড়া ব্যবসায়ী নূরে আলম। ১৯ নভেম্বর তিনি বাসায় তালা দিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হোসেনপুর উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে চলে যান। বাসার তালা ভেঙে স্টিলের আলমারি থেকে নয় লাখ টাকা ও প্রায় দেড় লাখ টাকা মূল্যের চার ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পরের দিন বিষয়টি টের পেয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন নূরে আলম।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রোববার দিবাগত রাতে তাওফিকুল ইসলামকে নিজ বাসা থেকে আটক করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তাওফিকুল জানান, পাঁচ বন্ধু ঘটনার রাতে তাদের বাসায় আড্ডা দেয়। এক সময় তারা ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ী নূরে আলমের ঘরের দরজায় তালা দেওয়া দেখতে পায়। এ সময় তারা ওই ঘরের তালা ভেঙে টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। টাকার ব্যাগ রাখা হয় পাশের বাড়ির প্রদীপের ঘরে।

ওসি মোশারফ জানান, তাওফিকুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ রাতেই প্রদীপের বাড়ি থেকে আট লাখ ৬৯ হাজার টাকা ও চার ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করে। অবশিষ্ট টাকা আসামি তাওফিকুল খরচ করে ফেলেন। রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় রাসেল ও রফিকুলকে। অপর দুই আসামিকে ধরতে অভিযান চলছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার পর ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ ও সাংবাদিকের তৎপরতায় শেষ পর্যন্ত সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। গতকাল সোমবার সকালে স্থানীয় সাংবাদিকেরা কিশোরগঞ্জ থানায় তথ্য সংগ্রহ ও ছবি তুলতে গেলে প্রভাবশালী দুই আওয়ামী লীগের নেতা এ ঘটনা নিয়ে সংবাদ না করতে অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে সাংবাদিকদের ছবি তুলতে দেওয়ায় তাঁরা থানার ওসির ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

– প্রথম আলো