ভৈরবে ‘আর্সেনিকোসিস রোগনির্ণয় ও ব্যবস্থাপনা-বিষয়ক’ কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা আর্সেনিকের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুরা আর্সেনিকমুক্ত পানি পান করছে কি না, তথ্যটি জানার আগ্রহ ছিল সবার। সবার এমন আগ্রহে ভৈরব উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম লিখিত একটি প্রতিবেদন পেশ করেন। তিনি বলেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভৈরবের ৮৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নলকূপ পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭টিতে তীব্র মাত্রায় আর্সেনিক পাওয়া গেছে। ওই নলকূপের পানি পান না করার জন্য লাল রং দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়কেও জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গত ১৯ ফেব্রুয়ারির।

ওই কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা ১৭টি বিদ্যালয়ের নাম জানতে চান। এবার নড়েচড়ে বসেন প্রকৌশলী। তবে তিনি আশ্বস্ত করেন, নিজ কার্যালয়ে যাওয়ার পর তিনি বিদ্যালয়গুলোর নাম জানাতে পারবেন। এর পর থেকে সাংবাদিকেরা প্রায় প্রতিদিন তাঁর কার্যালয়ে গিয়ে ওই তালিকা চান। একপর্যায়ে নিজের অপারগতা প্রকাশ করে উপসহকারী প্রকৌশলী বলেন, ‘আমার কাছে নয়, অফিসের কর্মচারী মজিবুর মিয়া পরীক্ষার কাজটি করেছেন। এ-সংক্রান্ত তথ্য তাঁর কাছে আছে।’

উপসহকারী প্রকৌশলীর এমন কথায় বিস্মিত হন মজিবুর। তিনি বলেন, ‘এই তথ্য তো আমার কাছে নাই, স্যার। আর্সেনিকের বিষয়ে কোনো পরীক্ষাই হয় নাই।’ এদিকে ওই কার্যালয়ের একাধিক কর্মচারী বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসে আর্সেনিকের ওপর কোনো পরীক্ষা হয়নি। সেমিনারে উপসহকারী প্রকৌশলী মিথ্যা তথ্য দিয়ে সবাইকে বিভ্রান্ত করেছেন।’ উপসহকারী প্রকৌশলীর এমন তথ্যের কথা শুনে বিস্মিত হন উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল আলিম। তিনি বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নলকূপে সাম্প্রতিক সময়ে কোনো পরীক্ষা হওয়ার কথা তাঁর জানা নেই। শিক্ষা কর্মকর্তা অমিতাভ দেবনাথ বলেন, ‘চেয়েছিলাম বিদ্যালয়গুলোর নলকূপের আর্সেনিক পরীক্ষা করতে। জনস্বাস্থ্য অফিসের অসহযোগিতার কারণে কাজটি করা হয়ে উঠছে না।’ ১৭টি বিদ্যালয়ের নলকূপে আর্সেনিক আছে—জনস্বাস্থ্য কার্যালয়ের এমন তথ্য ঠিক নয় বলে দাবি করেন তিনি।

সুত্রঃ – প্রথম আলো