এবার কিশোরগঞ্জে স্কুল-কলেজের সামনে ছাত্রীদের উত্ত্যক্তকারী বখাটেদের ধরতে ছদ্মবেশে মাঠে নেমেছে জেলা পুলিশের মহিলা সদস্যরা। তাঁরা ছাত্রী সেজে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সামনে এবং আশপাশের রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন কৌশলে বখাটেদের ধরার চেষ্টা করছেন। ছাত্রী উত্ত্যক্তকারী বখাটেরা পুলিশের পাতা এ ফাঁদে পা দিলেই গ্রেপ্তার! জেলা পুলিশের এ অভিনব কৌশল কাজে লাগছে। ইতিমধ্যে সুন্দরী পুলিশ সদস্যের জালে আটকা পড়েছে চার বখাটে। মঙ্গলবার সকালে শহরের হাসমত উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে ছাত্রীবেশে পুলিশের মহিলা সদস্যদের সঙ্গে টিজ করার সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে_নগুয়া এলাকার সাইদুর রহমান পলাশ (২১), মাহবুব (২০), সাইফুর (১৭) ও রফিকুল ইসলাম ওরফে নোমান (১৯)। তাদের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। গতকালই আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
কিশোরগঞ্জ থানার ওসি মীর মো. মোশারফ হোসেন জানান, শহরের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের আশপাশে জেলা পুলিশের আট সদস্যের একটি সুন্দরী ও কমবয়সী মহিলা পুলিশদল ছাত্রীবেশে ঘোরাফেরা করে। তাদের আশপাশেই অবস্থান নেয় সাদা পোশাকের অপর একটি পুরুষ পুলিশের টিম। তারা ছদ্মবেশী মহিলা পুলিশের বিশেষ দলটিকে সব সময় দূর থেকে অনুসরণ করে।
জানা গেছে, সম্প্রতি কিশোরগঞ্জে বখাটেদের উৎপাত আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকেন। বখাটেরা এত বেপরোয়া থাকে যে অনেক সময় ছাত্রীরা ভয়ে মুখ খোলে না। গত দুই মাসে বখাটেদের উৎপাত ও অপমান সইতে না পেরে কিশোরগঞ্জের স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করে। ১৭ মার্চ বখাটেদের অত্যাচার-নির্যাতন সইতে না পেরে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার ভট্টাচার্য্যপাড়া এলাকায় চাঁদমনি নামে এক কিশোরী আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। সে শহরের আজিম উদ্দিন হাই স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। এর ১৯ দিন পর ৫ এপ্রিল জেলার তাড়াইলের পুরুরা কুনাভাওয়াল গ্রামের আলফাতুন ভূঁইয়ার মেয়ে মরিয়ম আক্তার পিংকি এক বখাটে যুবকের অপমান সইতে না পেরে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যা করে। পিংকি পুরুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মীর রেজাউল আলম জানান, উত্ত্যক্তকারী বখাটেদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশকে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।