খেলাদেখার শুরুতে জানতাম আজ বাংলাদেশেই জিতবে, কিন্তু ১৭৫ রানের টার্গেট দিয়ে জেতা যাবে এই প্রশ্ন ছিল সবার কিন্ত‍ু বাংলামায়ের দামাল ছেলেরা সেই জয় ছিনিয়ে এনে আবার র্গজে উঠেছে বাংলাদেশ সারাপৃথিবীকে দেখিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ও পারে।প্রথম দুই ওভারে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও জেসি রাইডারকে তুলে নিয়ে শুরুটা করেছিলেন রুবেল হোসেন। দলের ১০ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারানোর পর ২০ রানের মধ্যে ব্রাডলি ওয়াটলিং, কেন উইলিয়ামসন ও রস টেলর ফিরে গেলে ১৭৪ রানও অনেক বড় মনে হচ্ছিল নিউজিল্যান্ডের জন্য। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটে ড্যানিয়েল ভেট্টোরি ও গ্রান্ট এলিয়টের ৮৬ রানের জুটি জয়ের স্বপ্নে ছোঁয়ায় জীয়নকাঠি। ম্যাচ জিতলে ভেট্টোরি হয়তো এর জন্য ধন্যবাদ দিয়ে যেতেন বাংলাদেশের জুনায়েদ সিদ্দিককে।

নিউজিল্যান্ডের ৪১ আর ভেট্টোরির ১২ রানের সময় মাহমুদউল্লাহর বলে স্লিপে কিউই অধিনায়ককে নতুন জীবন তো দিয়েছিলেন তিনিই! ক্যাচ পড়েছে আরও দুটি। ভেট্টোরির ক্যাচ ফেলা জুনায়েদই নিতে পারেননি স্কয়ার লেগে নাথান ম্যাককালামের দেওয়া ক্যাচের সুযোগ। এ ছাড়া সাকিবের বলে ডিপ মিড উইকেটে এলিয়টকে জীবন দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ১২ রানে জীবন পেলেও ভেট্টোরিকে শেষ পর্যন্ত বড় হুমকি হতে দেননি সাকিব। দলের ১০৬ রানের সময় শফিউলের দুর্দান্ত এক ক্যাচ বানিয়ে ফিরিয়েছেন প্রতিপক্ষ অধিনায়ককে, নিউজিল্যান্ডের জয়ের স্বপ্ন তখনই ভেঙে গেছে অনেকটা।

তিন-তিনটি ক্যাচ মিসে আগের ম্যাচে প্রশংসা পাওয়া ফিল্ডিংটা কাল প্রশ্নবিদ্ধ। তবে বোলাররা সেটাকেও জয়ের পথের বাধা হতে দিলেন না। ৫-১-১৩-৩, দুর্দান্ত প্রথম স্পেলের পর স্লগ ওভারেও দেখা গেল অন্য রুবেলকে। গত বছরের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে স্লগ ওভারের দুঃস্বপ্নটা কাল শুধু মুছেই দেননি, ম্যান অব দ্য ম্যাচও এই পেসারই। শেষ ৩ ওভারে ২২ রান প্রয়োজন ছিল নিউজিল্যান্ডের। ৪৮তম ওভারে বল করতে এসে রুবেল দিলেন ৫। পরের ওভারে শফিউল ৯ রান দিয়ে দিলে শেষ ওভারে কিউইদের প্রয়োজন দাঁড়ায় মাত্র ৮ রান। রুবেলের প্রথম বলে বাউন্ডারি, পরের বলে কোনো রান নয় এবং তৃতীয় বলেই ভেঙে যায় মিলসের উইকেট। শেষ ম্যাচের তিন বল বাকি থাকতেই নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার আনন্দে নেচে ওঠে গোটা শেরেবাংলা স্টেডিয়াম, বাংলাদেশ।

বোলারদের সৌজন্যে শেষ ম্যাচেও জয় এসেছে, নইলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ব্যাটিং নিয়ে অতৃপ্তি থেকেই গেছে। হারলেও নিউজিল্যান্ড ইনিংসে তবু এলিয়টের ফিফটিটা আছে, বাংলাদেশ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান তো সাকিবের ৩৬! সর্বোচ্চ জুটি ষষ্ঠ উইকেটে সাকিব-মুশফিকুর রহিমের ৫৫ রান। সিডন্স এ ম্যাচে যে কয়টা উন্নতি দেখতে চেয়েছিলেন, তার মধ্যে জুনায়েদ-রকিবুলের রান পাওয়াটা ওপরের দিকেই ছিল। কিন্তু প্রিয় দুই ব্যাটসম্যান আবারও হতাশই করেছেন কোচকে। অন্যদের মধ্যে ইমরুল কায়েস, সাকিব আর মুশফিকুর সম্ভাবনা জাগিয়েও খেলতে পারেননি বড় ইনিংস। দলে এখন পারফর্মারের সংখ্যা বাড়লেও ব্যাটিংটা যেন আগের মতোই রয়ে যাচ্ছে! সাকিব ভালো খেললে বড় ইনিংস হয়, নয়তো নয়।

তবে শেষে জয়ের আনন্দে হারিয়ে গেছে সব অতৃপ্তি।