নাটকের নায়ক স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। ১৮৮৯ থেকে ১৮৯৫ সাল পর্যন্ত কাহিনি। তিনি তখন শিলাইদহ, পতিসর ও শাহজাদপুরে বাবার জমিদারি এস্টেট দেখভাল করার কাজে নিয়োজিত। কবির দেখা তখনকার বাংলাবৃত্তান্ত রয়েছে ছিন্নপত্রে। এটি অবলম্বন করেই নাটক বাংলার মাটি বাংলার জল।

নাটকের দল পালাকার প্রযোজিত বাংলার মাটি বাংলার জল রচনা করেছেন সৈয়দ শামসুল হক, নির্দেশনা দিয়েছেন আতাউর রহমান। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নাটকটির প্রথম প্রদর্শনী হলো শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালায়। নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র রবীন্দ্রনাথকে ঘিরেই। বিলেতফেরত রবীন্দ্রনাথ। পারিবারিক জমিদারির দায়িত্ব নিয়ে কলকাতা থেকে এলেন বাংলাদেশের শিলাইদহ-শাহজাদপুর-পতিসরে। জাঁকজমকের সঙ্গে তাঁর অভ্যর্থনার আয়োজন করেছেন নায়েব। সম্বোধন করেছেন ‘রাজা’ বলে। কবি চমকে উঠলেন ‘রাজা’ সম্বোধনে। তিনি বললেন, ‘কে রাজা? আমি তো রাজা নই।’ তিনি উপস্থিত গ্রামবাসীকে বলেন, ‘আমি এসেছি তোমাদের সঙ্গে থাকব, মিলব বলে।’

কলকাতা থেকে আসার সময় রবীন্দ্রনাথ ভাতিজি ইন্দিরা দেবীকে (সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেয়ে) কথা দিয়েছিলেন, বাংলাদেশে এসে যা কিছু দেখবেন, তার সবই লিখে জানাবেন। শিলাইদহ-শাহজাদপুর-পতিসরে বাংলাদেশের প্রকৃতির রূপ নতুন করে আবিষ্কার করতে থাকেন তিনি। এর বর্ণনা চিঠি আকারে পৌঁছে যেতে থাকে ইন্দিরা দেবীর কাছে। সেসব চিঠি নিয়েই ছিন্নপত্র। নাটকে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে এসেছে ইন্দিরা দেবী চরিত্রটিও। পাশাপাশি তৎকালীন বাংলাদেশের সমাজ ও বিচিত্র মানুষের জীবনযাত্রাও এসেছে নাটকে। নাটকের প্রধান চরিত্রগুলোতে অভিনয় করছেন শামীম সাগর, নাহিদা শারমিন, শাহানা বাপ্পি, সেলিম হায়দার, ফাহমিদা মল্লিক, ইভা খান, কাজী ফয়সল, মোহাম্মদ আলী, নূরী শাহ, শাহরিয়ার খান, অনিকেত পাল ও আমিনুর রহমান।

– প্রথম আলো