গ্রীষ্মকালীন ছুটির সময়সীমাকে কেন্দ্র করে দুই দল শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবাসিক হলের ছাত্রদের রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে এবং ছাত্রীদেরকে রোববার সকাল ১০টার মধ্যে হল ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে।

এই নির্দেশ পাওয়ার পর ছাত্ররা সন্ধ্যার দিকে হল ছাড়তে শুরু করে।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে বুয়েটের একাধিক শিক্ষার্থী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগামী ২৮ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রীষ্মকালীন ছুটি শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিশ্বকাপ ফুটবল দেখা নির্বিঘ� করতে ০৭ ব্যাচের (তৃতীয় বর্ষ নতুন) একদল শিক্ষার্থী শনিবার থেকেই ছুটি ঘোষণার দাবি জানায়।

এ দাবিতে তারা সকালে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন একাডেমিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয় এবং ক্লাশমুখী শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যেতে বাধা দেয়। এ সময় ০৫ ব্যাচের (চুড়ান্ত বর্ষ) কিছু শিক্ষার্থী লাঞ্ছিত হলে ক্যাম্পাসজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

এ সময় ০৬ ব্যাচের (তৃতীয় বর্ষ পুরাতন) কিছু শিক্ষার্থী ০৭ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সাথে যোগ দিয়ে ০৫ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিতে ব্যাপক তৎপতরতা শুরু করে।

এতে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায় এবং ক্যাম্পাসজুড়ে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পরে বুয়েট ছাত্রলীগ নেতারা এ ব্যাপারে সমাঝোতার উদ্যোগ নেন। তাদের মধ্যস্থতায় দুপক্ষ এম এ রশীদ হলের ডাইনিং-এ সমঝোতা বৈঠকে বসে। কিন্তু বৈঠক চলাকালে আবারও সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় দুজন শিক্ষার্থী আহত হয়।

এ ঘটনার পর ক্যাম্পাসে দুপক্ষের মধ্যে মহড়া-পাল্টা মহড়া চলতে থাকে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষ বিকালে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে বুয়েটের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, সংঘর্ষ ও মহড়ায় অংশগ্রহনকারীদের বেশিরভাগই ছাত্রলীগ কর্মী। তারা বিভিন্ন হলে ছাত্রলীগে সক্রিয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শাহ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ”দুই দল শিক্ষার্থীর মধ্যে সংঘর্ষের কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতি বিবেচনা করে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকাল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”

তিনি জানান, ছাত্রদের রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে এবং ছাত্রীদের রোববার সকাল ১০টার মধ্যে হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭টি ছাত্র হল ও একটি ছাত্রী হল রয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে শিক্ষার্থীরা দলে দলে হল ছাড়তে শুরু করে।