ব্রহ্মপুত্র, নরসুন্দা, সিংগুয়া ও শঙ্খ নামে দেশের চার নদীর অস্তিত্ব প্রায় বিলীনের পথে। বিরূপ প্রকৃতি, অদূরদরশী নদীর ব্যবস্থাপনা ও ভূমিদসু্যদের তাণ্ডবে শঙ্খনদীর মৃতু্য ঘটেছে। অপর তিন নদীর দু’পাড়ের প্রভাবশালীরা নদী দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। অল্প দিনরে মধ্যে এগুলোর অস্তিত্ব ও বিলীন হয়ে যাবে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদ আসামের ধুবড়ি থেকে উৎপত্তি হয়ে দক্ষিণ-পূর্বমুখী কুড়িগ্রাম ও জামালপুর জেলার ভিতর দিয়ে যমুনার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এ নদীর দৈঘ্য ৫ হাজার ৪শ’ ৩১ কিলোমিটার। বর্তমানে ভারতীয় সীমান্তবর্তী ৪০ কিলোমিটারসহ ময়মনসিংহ পর্যন্ত ৩শ’ ৬৪ কিলোমিটার মরে গেছে।

নরসুন্দা নদী ব্রহ্মপুত্রের পাকুন্দিয়া এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে ধনু নদীতে পতিত হয়েছে। এ নদীর দৈঘর্্য ৬০ কিলোমিটার। সিংগুয়া নদী পাকুন্দিয়া উপজেলার পাটুয়াভাঙ্গা নবাগিয়া বিল থেকে উৎপত্তি হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার কোদালাটিয়া এলাকার নরসুন্দা নদীতে পতিত হয়েছে। এ নদীর দৈঘ্য প্রায় ৩০ কিলোমিটার। শঙ্খ নদীর কোন তথ্য পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রণীত নদ-নদীর তালিকায় পাওয়া যায়নি। ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মোঃ ফজলুর রহমানসহ কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, শঙ্খ নদীর পাকুন্দিয়া উপজেলার ঐতিহাসিক এগারসিন্দুর এলাকার ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে উৎপত্তি হয়ে খামা বিল ও মুলাদি বিল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সিংগুয়া নদীতে পতিত হয়েছিল। এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খুশী মোহন জানান, মৃত শঙ্খ নদীর সঠিক তথ্য সংগ্রহের জন্য জরিপের কাজ চলছে। বর্ষা মৌসুমে ব্রহ্মপুত্র নদে নৌযান চলাচল করতে পারলেও নরসুন্দা এবং সিংগুয়া নদী অযত্নে-অবহেলায় মরা খালের রূপ নেয়। শঙ্খ নদী পলিতে ভরাট হলে অনেক পূর্বেই প্রভাবশালীরা দখল করে নেয়। কয়েকটি স্থানে জলাশয়ের চিহ্ন দেখা গেলেও বোঝার উপায় নেই যে, এখানে এক সময় নদী ছিল। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ব্রহ্মপুত্র, নরসুন্দা ও সিংগুয়া নদীর বিস্তীর্ণ চরে প্রভাবশালীরা ফসল আবাদ এবং পাড় ভরাট করে বাসা-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছে।

ইত্তেফাক