এক অভাবী মহিলার নাম লতিফা।তার দুই শিশুসন্তান মহিমা (৬) ও মোহনা (২)। অভাব-অনটনের মধ্যে অনেক কষ্টে তিনি লালনপালন করছিলেন দুই মেয়েকে। হঠাৎ করে গতকাল বুধবার দুই সন্তানকে নিয়ে লতিফা খালে ঝাঁপ দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই দুই বোনের মরদেহ ভেসে ওঠে। কিন্তু তিনি বেঁচে যান। বিকেলে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার গাজিরচর ইউনিয়নের খন্দকারকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
প্রতিবেশীরা জানায়, খন্দকারকান্দি গ্রামের আ. আওয়াল (৩৮) আট বছর আগে একই জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার বাঙ্গালপাড়া গ্রামের লতিফা বেগমকে (২৮) বিয়ে করেন। আওয়াল পেশায় রাজমিস্ত্রি। বিভিন্ন সময়ে নানা বিষয়ে এই দম্পতির মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিত। মাঝেমধ্যে তাঁদের মধ্যে হাতাহাতিও হতো।
গতকাল সকাল নয়টার দিকে কাজে যাওয়ার আগে আওয়াল স্ত্রীকে দ্রুত নাশতা বানিয়ে দিতে বলেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে প্রচণ্ড ঝগড়া হয়। এ সময় শিশু দুটি ঘরে খেলা করছিল। তখন লতিফা স্বামীর উদ্দেশে বলেন, ‘আমি তোমার দুই সন্তান নিয়ে পৃথিবী ছাড়ব।’ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মোহনাকে কোলে নিয়ে ও মহিমাকে হাতে ধরে ঘর থেকে বের হন লতিফা। কিছুক্ষণ পর দুই শিশুকে নিয়ে খালের পানিতে ঝাঁপ দেন তিনি। এলাকাবাসী লতিফাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান।
শিশুদের ফুফাতো ভাই উজ্জ্বল মিয়া জানান, নানা বিষয়ে মামা-মামির মধ্যে মনোমালিন্য হতো। কিন্তু নিজের দুই সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যা করতে যাবেন, এমনটা তাঁরা কেউ ভাবতেও পারেননি।
দুই শিশুসন্তানকে হারিয়ে অনেকটা বাকরুদ্ধ আ. আওয়াল মিয়া। তিনি বলেন, তাঁর স্ত্রী প্রচণ্ড রাগি। কথায় কথায় রাগ করেন। সন্তানদের নিয়ে মরে যাওয়ার ভয় দেখাতেন। সকালে সামান্য তর্ক হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শাহরিয়ার মুঠোফোনে আমাদের সংবাদকর্মীকে জানান, লতিফা বেগমের চিকিৎসা চলছে।