ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মেঘনা নদীতে লঞ্চডুবির ঘটনায় শুক্রবার সকালে তিন শিশুসহ আরো পাঁচটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ৩৩ জনে দাঁড়ালো। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার রাজাপুরে নদীতে ডুবে থাকা একটি কার্গোর সঙ্গে ধাক্কা লেগে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে শতাধিক যাত্রীসহ লঞ্চটি ডুবে যায়। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হেলাল উদ্দীন জানান, ঢাকা থেকে আসা ডুবুরি দল ও কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের জলযান বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে উদ্ধার কাজ স্থগিত করে। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে পুনরায় উদ্ধার কাজ শুরুর পর আরো পাঁচটি লাশ উদ্ধার করা হয়।

ইউএনও জানান, সকালে উদ্ধার করা মৃতদেহগুলোর মধ্যে তিনটি শিশুও রয়েছে। তাদের পরিচয় জানা যায়নি। বিআইডব্লিউটিএর উপ পরিচালক জয়নুল আবেদিন জানান, উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। শুক্রবার সকালে সেটি অভিযানে যোগ দিয়েছে।

এ পর্যন্ত উদ্ধার করা লাশের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে, তারা হলেন- জয়া খাতুন (৫০), তহুরা (৪৫), সুফিয়া (৪০), আঙ্গুরা বেগম (৩৫), বাবু (৩৫), জাহেরা খাতুন (৫০), শ্যামা ওরুফে নাম্মী (৩০), ফয়জুন্নেছা (৬০), নগেন্দ্র বাবু (৫০), শ্যামা বিবি (৭৫), এলাচী বেগম (৫০), সোনিয়া (২০), তাসলিমা (২৫), পশুরাম (২৫), আবু কাউছার (১৫), সজীব (১৫), মোছা. সিমা (১২), তানজিলা (১) ও নাদিম (৪)।

অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল বিষয়ক বেসরকারি সংগঠন যাপ-এর সিলেট অঞ্চল ও ভৈরব-কিশোরগঞ্জ এলাকার সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান সেলিম জানান, কিশোরঞ্জের ভৈরব লঞ্চ ঘাট থেকে এমভি বিপাশা নামের লঞ্চটি বুধবার রাত ১১টার দিকে ১শ ৩০ জন যাত্রী নিয়ে সুনামগঞ্জের সাচনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে সরাইল উপজেলার রাজাপুরে মেঘনা নদীতে ডুবে থাকা একটি কার্গোর সঙ্গে ধাক্কা লেগে তলা ফেটে লঞ্চটি ডুবে যায়। কয়েকজন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও যাত্রীদের অধিকাংশই লঞ্চের ভেতরে আটকা পড়ে বলে স্থানীয়রা জানায়।পরিবহন পরিদর্শন ট্রাফিক (টিআই) শাহ আলম জানান, লঞ্চে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আনসারদের তিনটি রাইফেল ও ৬০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সাংসদ জিয়াউল হক মৃধা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) আব্দুল মান্নান, এসপি জামিল আহমেদ, সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হেলাল উদ্দিন বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে যান এবং উদ্ধার কাজ পরিদর্শন করেন। সাংসদ জিয়াউল হক মৃধা জানান, নিহতদের প্রত্যেকের দাফন সম্পন্ন করতে ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান জানান, লাশ সরকারি খরচে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হবে।

– বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর