নেতৃত্ব নিয়ে সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। দায়িত্ব গ্রহণের ৮ মাসেও নির্বাচন করতে পারেননি সরকার নিযুক্ত প্রশাসক। এ অবস্থায় প্রশাসকের মেয়াদ শেষের সুযোগে তাকে পাশ কাটিয়ে পৃথক কমিটি গঠন করেছেন চেম্বারের পরিচালকরা। তবে নতুন করে মেয়াদ বৃদ্ধির পর প্রশাসক ওই কমিটিকে অবৈধ বলে দাবি করেছেন। এ নিয়ে সিলেটে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে।
সংশিল্গষ্ট সূত্র জানায়, বিগত জোট সরকারের আমলে চেম্বারের সর্বশেষ নির্বাচনে সভাপতি হন নগর বিএনপি নেতা জুন্নুন মাহমুদ খান। ওই সময় তার বিরুদ্ধে চেম্বারের মেলা আয়োজন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে মামলাও হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে একাধিক পরিচালক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ আনলে ২০০৯ সালের ১৮ অক্টোবর তাকে অপসারণ করা হয়। এরপর চেম্বারের প্রশাসক হিসেবে সাবেক সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরীকে নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ওই সময় ফারুক মাহমুদকে ১২০ দিনের মধ্যে সিলেট চেম্বারের নির্বাচন আয়োজন
ছাড়াও অপসারিত সভাপতির সব অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্তের দায়িত্ব দেয়; কিন্তু নির্ধারিত সময়ে চেম্বার প্রশাসক নির্বাচন আয়োজন করতে ব্যর্থ হন। এ অবস্থায় তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় তার দায়িত্বের মেয়াদ আরও ৪ মাস বৃদ্ধি করে। বর্ধিত ওই মেয়াদও
গত ১৮ জুন শেষ হয়ে যায় বলে সংশিল্গষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
অবশ্য এর আগে প্রশাসক আগামী ১৮ জুলাই নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করে সিলেট চেম্বারের বহুকাঙ্ক্ষিত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন; কিন্তু উচ্চ আদালতে চেম্বারের কয়েকজন পরিচালকের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ জুলাইয়ের নির্বাচনও স্থগিত হয়ে যায়। এ অবস্থায় সিলেট চেম্বারের নির্বাচন আবারও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে।
এর মধ্যে প্রশাসকের মেয়াদ শেষ হওয়ার সুযোগে তাকে পাশ কাটিয়ে চেম্বারের ১৪ জন পরিচালক পৃথক কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটিতে সভাপতি হিসেবে রয়েছেন শফিক আহমদ বখত এবং সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সহ-সভাপতি হিসেবে যথাক্রমে রয়েছেন কলন্দর আলী ও এনামুল কুদ্দুস চৌধুরী। কলন্দর আলী কমিটি গঠনের কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, এখন থেকে তাদের কমিটিই চেম্বারের সব কাজ পরিচালনা করবে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসক নির্বাচন আয়োজন না করে বাণিজ্য মেলা ও এফবিসিসিআই নির্বাচনে প্রতিনিধি প্রেরণসহ নানা নিয়মবহির্ভূত কাজ করেছেন। তাই বাধ্য হয়ে চেম্বার পরিচালকরা মিলে কমিটি গঠন করেছেন।
তবে চেম্বার প্রশাসক ফারুক মাহমুদ চৌধুরী অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো পরিচালকদের গঠিত কমিটিকে অবৈধ দাবি করেছেন। গত ১৮ জুন তার দায়িত্বের মেয়াদ শেষের কথা স্বীকার করে তিনি জানিয়েছেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আবারও প্রশাসক হিসেবে তার মেয়াদ আরও ১২০ দিন বৃদ্ধি করেছে। তবে প্রশাসকের দায়িত্বের মেয়াদ বৃদ্ধির কথা জানা নেই বলে দাবি করেছেন কলন্দর আলী।
এদিকে প্রশাসক নিযুক্ত থাকা অবস্থায় পরিচালকরা মিলে কোনো কমিটি গঠনের এখতিয়ার নেই উলেল্গখ করে ফারুক মাহমুদ বলেন, নির্বাচন আয়োজনের জন্য তফসিল ঘোষণা করেছিলাম; কিন্তু কয়েকজন পরিচালক এর বিরুদ্ধে রিট করায় উচ্চ আদালত তা স্থগিত করেছেন। এ অবস্থায় আইনি প্রক্রিয়ায় নির্বাচন আয়োজনের জন্য তিনি সচেষ্ট রয়েছেন বলে জানান।